দেশ

‌দিল্লি হিংসায় পুলিশের চার্জশিটে কেবল সিএএ বিরোধীদের নাম, নেই সমর্থনদের নাম

‌ দিল্লি হিংসায় ১৫ জনই সিএএ-এনআরসি বিরোধী। সিএএ সমর্থনকারী কারওর নাম নেই দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে। অভিযুক্তদের নাম, অভিযোগ ও পাদটীকা সহ একটি ১৭,৫০০ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়েছে আদালতে। সিএএ-এনআরসি আইন প্রণয়নের জেরে গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে বিরোধী ও সমর্থনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই হিংসায় সরকারি হিসেবে ৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। এবং আহত হয়েছিলেন প্রায় ২০০ জন। ঘরছাড়া হয়েছিলেন একশোজনেরও বেশি।

গত ফেব্রুয়ারির হিংসার পেছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল বলে আগে থেকেই দাবি করে আসছিল দিল্লি পুলিশ। এবার তারা আদালতকে জানাল, ‘‌এই বিক্ষোভটি প্রথম থেকেই গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ছিল না। রাস্তা আটকানোকে কীভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ বলা যায়?‌ এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে হিংসায় অংশগ্রহণ করেছে এমন অনেকের সঙ্গেই সরাসরি যোগাযোগ ছিল এই ষড়যন্ত্রকারীদের। দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও ব্যবহার করা হয়েছিল সিলামপুর ও জাফরাবাদে হিংসা ছড়ানোর চক্রান্তের জন্য।’‌
অভিযুক্তদের নাম, অভিযোগ ও পাদটীকা সহ একটি ১৭,৫০০ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়েছে আদালতে। এমনকী কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী বেআইনি কার্যক্রম প্রতিরোধ আইনের আওতায় অভিযুক্ত হয়েছেন অনেকেই। মামলায় যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁদের মধ্যে বামপন্থী ছাত্র ও সিএএ-এর বিরোধীরাই রয়েছে। যাঁরা গ্রেপ্তার হননি তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজেপির কপিল মিশ্র। দেশের বিরাট অংশের মানুষের বক্তব্য, তাঁকে একটি ভিডিওতে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে দেখা গিয়েছিল। এমনকী সেই ভিডিওতে পাশে একজন পুলিশকর্মীও দাঁড়িয়ে। তিনি রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য প্ররোচনা দিচ্ছিলেন মানুষকে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই ওই হিংসার শুরু। অথচ কপিলের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করে বিরোধী নেতা, সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ। হিংসার সম‌য়ে দিল্লি পুলিশের ভূমিকাও তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিল।
দিল্লি হিংসার ঘটনায় নাম নেই বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের। অথচ সিএএ-‌বিরোধী সভা করার জন্য এমনকী সীতারাম ইয়েচুরি ও যোগেন্দ্র যাদবদের নামও তুলে দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে!‌ সেই প্রসঙ্গে এর আগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‌.‌.‌.‌এরপর গুজরাট দাঙ্গায় নেহরুর নাম উঠবে।’ পুলিশকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরি।