রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরানোর এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের দাবিতে আজ বিজেপির-র নবান্ন অভিযান । অনুমতি দেওয়া হয়নি নবান্ন অভিযানের । তারপরেও বিজেপির কর্মসূচির ব্যাপারে বদ্ধপরিকর । বিজেপির যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় , অরবিন্দ মেননরা জানিয়ে দিয়েছেন , কর্মসূচি সফল করতে চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না । সেই অনুযায়ী কোমর বাঁধছে পুলিশ । লালবাজার এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর, ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেডে মিছিল রুখে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে পুলিশের । নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার অতিরিক্ত পুলিশকর্মী । তবে প্রশাসনের তরফে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে । কোনওভাবেই একটি মিছিলও নবান্নের ধারেকাছে পৌঁছাতে দেওয়া হবে না বলে ঠিক হয়েছে । অনুমতি না থাকার জন্য মিছিল শুরুতেই আটকে দেওয়ার চেষ্টা করবে পুলিশ । সেখানে পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত থেকে নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে মিছিল থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেবেন। কিন্তু BJP-র তরফে যেহেতু মিছিল করার জন্য চেষ্টা চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে, তাই অতিরিক্ত পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে । কলকাতা পুলিশের তরফে প্রায় ২০০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে । কলকাতা এবং
হাওড়া মিলিয়ে প্রায় ২০০ জন আধিকারিক উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন জায়গায় । থাকবেন আইপিএস পদমর্যাদার অফিসাররাও । কলকাতার ২টি মিছিল হাওড়া ব্রিজ এবং দ্বিতীয় হুগলি সেতুর আগেই আটকে দেওয়া হবে । তৈরি করা হবে অ্যালুমিনিয়াম ব্যারিকেড । থাকছে জলকামান বজরা । তেমন প্রয়োজনে কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর । থাকছে জলকামান। মিছিলের উপর নজর রাখতে ব্যবহার করা হবে ড্রোন ক্যামেরা । সদর দপ্তরের মূল মিছিলটি যদি হাওড়া ব্রিজের আগে আটকে না দেওয়া যায়, তবে সেটি হাওড়া স্টেশনের কাছে আটকে দেওয়া হবে । প্রতি ক্ষেত্রেই থাকছে ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা । চারটি মিছিলের জন্য তৈরি করা হচ্ছে মোট পাঁচটি সেক্টর । প্রতি সেক্টরের দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা । সঙ্গে থাকবেন যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ অফিসাররাও । তবে পুলিশ আধিকারিকরা মিছিলে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের তরফে কোনও প্ররোচনা এলে তা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ।গত কালই সায়ন্তন বসু বলেন, “ আমাদের কর্মসূচি
গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার ভাঙতে চায় না । কিন্তু একতরফাভাবে শিষ্টাচার মানা সম্ভব নয় । পুলিশ গুলি করলে আমরা তো আর মিষ্টি খাওয়াব না ।” আজ চারটি দলে ভাগ হয়ে নবান্ন অভিযান করবে বিজেপি। বেলা ১২টায় শুরু হবে নবান্ন অভিযান । সকাল থেকেই জেলা থেকে বিজেপি কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আসতে শুরু করে দিয়েছেন । পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া , বর্ধমান-সহ বেশ কিছু জেলার কর্মীরা যোগ দেবেন হাওড়ার দুটি মিছিলে । এই দু’টি মিছিলের একটিতে নেতৃত্ব দেবেন যুব মোর্চার সভাপতি তেজস্বী সূর্য । সঙ্গে থাকবেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ । এই মিছিলটি শুরু হবে হাওড়া ময়দান থেকে । পরিকল্পনা রয়েছে এই মিছিলটি হাওড়া ময়দান থেকে জি টি রোড ধরে নবান্নের দিকে এগোবে । অন্যটির নেতৃত্বে থাকবেন সায়ন্তন বসু এবং রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় । এই মিছিলটি শুরু হবে সাঁতরাগাছি থেকে । অন্যদিকে , কলকাতা , উত্তর ২৪ পরগনা , দক্ষিণ ২৪ পরগনা , নদিয়া-সহ বেশ কিছু জেলার কর্মীরা যোগ দেবেন কলকাতার দু’টি মিছিলে । এই দু’টি মিছিলের একটি শুরু হবে বিজেপি-র সদর দপ্তর থেকে । যার নেতৃত্বে থাকবেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ । পরিকল্পনা রয়েছে এই মিছিলটি সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে মহাত্মা গান্ধি রোড হয়ে হাওড়া ব্রিজ ধরে নবান্নের দিকে এগোবে । অন্য মিছিলটি শুরু হবে হেস্টিংস থেকে । যার নেতৃত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় , সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় , সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা।