কড়া হাতে ফের দলের রাশ ধরছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই শাসক দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জানিয়ে দিলেন, ‘আমি বলছি সারা বাংলায় আমিই পর্যবেক্ষক। ‘বাঁকুড়ার শুনুকপাহাড়ীর মাঠ থেকে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কার্যত কারও নাম না নিয়ে শুভেন্দু সহ দলের বিক্ষব্ধদের কড়া বার্তা দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার জেরে এখন দুটি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খোদ তৃণমূলেরই অন্দরে। এক পক্ষ ভাবছে দলনেত্রীর স্পষ্ট বার্তার পরে শুভেন্দু সহ দলের বিক্ষুব্ধরা দলছাড়ার পথেই আরও এগিয়ে যাবেন। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধরা ভাবছেন আজকের পর তাঁদের দলে আরও কোনঠাসা দশা হবে। স্বভাবতই এবার হিসেবনিকেষের কড়ি গুনতে বসে গিয়েছে বিজেপি। যদি কেউ আসে ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মে। এদিন শুনুকপাহাড়ির মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো কারও নাম না করেই কড়া বার্তা দেন শুভেন্দু অধিকারী সহ দলের বিক্ষুব্ধদের। স্পষ্টভাবেই জানান, ‘একশো জন লোকের মধ্যে কখনই বলতে পারি না একশো জনই ভাল। এক আধজন খারাপ হতেই পারে। রাজনীতি করতে গেলে, কাজ করতে গেলে, যেটা শিখেছি, যদি ২৫ শতাংশের মধ্যে ভুল থাকে তাহলে সেটা সংশোধন করে নেবে। কিন্তু তৃণমূল ভুল পথে পা দেবে না। কোনও ব্যক্তির ওপর রাগ থাকতেই পারে। কিন্তু তার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে ভুল বুঝবেন না। আমরাও রিপোর্ট নিই। রিপোর্ট কার্ড খারাপ থাকলে বলি তুমি দূরে থাকো। আমি নতুন ছেলেমেয়ে তৈরি করে নেব। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাটি। সেকি এমনি এমনিই! নিশ্চয়ই ভালো কিছু করবো বলে। অনেকে ভাবেন বাঁকুড়া জেলার অবজার্ভার কে, পুরুলিয়ার কে, মেদিনীপুর কে দেখবে? আসানসোল কে দেখবে? আগে দলকে ম্যাসেজ দিই। সারা বাংলায় একজন কর্মী হিসাবে আমিই একজন অবজার্ভার। কারন প্রত্যেকটা ব্লক থেকে ব্লকে কে কী করছে, কে কে কনট্যাক্ট করছে, কার সঙ্গে কে যোগাযোগ রাখছে, এ টু জেড আমি খবর রাখি। দল আমায় সাহায্য করছে। দলতা সবাইকে মিলেই করতে হয়। মনে রাখবেন আপনার তালডাংরায় কিছু হলে আমি অবজার্ভার। ছাতনায় কিছু হলে আমিই অবজার্ভার। ‘ এর পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো জানান, ‘আমার ওপর খুব চাপ পড়ে গিয়েছিল। তাই একটু ঢিলে দিয়েছিলাম। এ বার বাঁকুড়া থেকে শুরু করলাম। সরকার যেমন দায়িত্ব নিয়ে দেখি, দলটাকেও তেমন দায়িত্ব নিয়েই দেখবো। দু-একজনকে দেখতে পাবেন হয়তো তৃণমূল করে আবার এদিক ওদিক যোগাযোগও রাখে। ভাববেন না দিদি এসব কিছুই জানে না। দিদি ছেড়ে রেখেছে সেটা তাঁদের তো বুঝতে হবে। সে যে যোগাযোগ রাখছে সে তো খবরতাও পাস করছে। ছাগলের একটা ছানাকে তো ছেরে রাখতে হবে। আমরা মনে করি তাঁরা ধান্ধাবাজ। এই ধান্ধাবাজদের একটা গোষ্ঠী আছে। তাঁদের সংখ্যা খুবই কম। যারা টাকা দিয়ে বাংলা দখল করতে চাইছে, তাঁদের বলে রাখি বাংলা টাকার কাছে মাথা নত করে না।’ মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের এই আক্রমণ যে শুভেন্দু অধিকারী সহ দলেরই বিক্ষুদ্ধ বিধায়কদের প্রতি সেটা বুঝতে আর কারও বাকি রইল না। দলনেত্রীর অবস্থান ও বক্তব্য স্পষ্ট হয়ে যেতেও এখন মনে করা হচ্ছে শুভেন্দু সহ দলের বিক্ষুব্ধদের সামনে এখন দুটি রাস্তাই খোলা থাকছে। এক দলের নির্দেশ মেনে চলা, আর নয়তো দল ছেড়ে বেড়িয়ে যাওয়া। শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে এই অবস্থান আদৌ মেনে চলা সম্ভব নয় বলেই অধিকাংশ নেতার অনুমান। আর তাই আজকের পর দ্রুত তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর রসায়ন বদলে যাবে বলেই সকলের ধারনা।