১২ ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের পরিবর্তে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হবে
আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামিকাল বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড প্রাইমারি স্কুলে ১৬৫০০ শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। তিনি জানিয়েছেন, এর পর ১০ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ইন্টারভিউ চলবে। তার পর যত শীঘ্র সম্ভব প্যানেল ঘোষণা করে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন এও জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি থার্ড টেট পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়া হবে। আড়াই লক্ষ প্রার্থী এই পরীক্ষায় বসবেন। ক’দিন আগে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট বড় রায় ঘোষণা করেছে। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কবে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে, কবে লিখিত পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ হবে। হাইকোর্টের সেই নির্দেশ থেকে পরিষ্কার মে মাসের মধ্যে যথা সময়ে ভোট হলে তার আগে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্ভব হবে না। তা সম্পূর্ণ রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই জানান, ‘স্কুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নিজ জেলায় পোস্টিং সম্পর্কিত বিষয়টি বেশ ভাল ভাবেই নজর রাখছে রাজ্য সরকার। তাই চেষ্টা করা হচ্ছে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক হোক কী সেকেন্ডারি স্কুল শিক্ষক সকলের ক্ষেত্রেই যতটা সম্ভব নিজ জেলায় বা জেলার কাছাকাছি বদলির ব্যবস্থা করতে। প্রাইমারি স্তরে এখনও পর্যন্ত ১০১৬৩ আবেদন জমা পড়েছিল। এদের মধ্যে ৬৪৬৬ আবেদন গৃহীত হয়েছে ও বাড়ির কাছেই স্কুলে তঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে। সেকেন্ডারি লেবেলে এই আবেদন জমা পড়েছিল ৫৫০২টি। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে ৩৮৫২ শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে নিয়োগ করেছি। মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার হওয়ার ক্ষেত্রে আবেদন জমা পড়েছিল ৪৫৯৩টি। এর মধ্যে ৪৪৯০ কেসে আমরা সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিয়েছি।’ তিনি এও জানান, ১২ ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের পরিবর্তে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হবে। সম্প্রতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর সেই অভিযোগ হয়েছে। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে গেরুয়া শিবিরের সেই অভিযোগই খারিজ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বহু বিজেপি নেতাকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ হোক কিংবা উত্তরবঙ্গ সর্বত্রই গেরুয়া শিবিরের নেতাকর্মীদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। তা নিয়ে আগেও একাধিকবার শাসক-বিরোধী তরজা হয়েছে। তার জবাবে মঙ্গলবার বিজেপিকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা হলেও বলছে রাজনৈতিক খুন। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হলেও বলছে রাজনৈতিক খুন।’ এছাড়াও রীতিমতো খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ২০০১ থেকে ১১ সাল পর্যন্ত ৬৬৩ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ ২০১১ সালের পর থেকে সেই সংখ্যাই অনেক কমেছে বলেই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।