জেলা

মানুষ শুভেন্দুকে ইঁদুর থেকে বাঘ করেছিল, সেই মানুষই ফের তাঁকে ইঁদুর করে দেবেনঃ সৌগত রায়

পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টা সিটই তৃণমূল জিতবে এবারও

শুভেন্দু অধিকারির দলত্যাগের পর বুধবার কাঁথিতে আজ শক্তি প্রদর্শন করল তৃণমূল। সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিমের মতো রাজ্যস্তরের নেতার পাশাপাশি, অখিল গিরি, আবু সুফিয়ান, সুপ্রকাশ গিরির মতো স্থানীয় স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এদিন তাঁর বক্তব্যে শুভেন্দু অধিকারিকে তোপ দেগে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘কাঁথি কোনও একটি পরিবারের সম্পত্তি নয়। এটা বাঙালির অস্মিতার লড়াই। এই লড়াইয়ে আপনাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই থাকতে হবে।’ পাশাপাশি, ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘শুভেন্দু বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন নিজের সুবিধার জন্য। অমিত শাহের পা ধরে কী বললেন। নিজের দোষ খন্ডন করলেন। লজ্জা লাগে আমার। তাঁর সহকর্মী বলতে নিজেকে লজ্জা লাগে। মানুষকে ধোকা দিলে শুভেন্দু। মমতাকে নয়। এর জবাব মানুষ দেবেন।’ সৌগত রায় বলেন, ‘মানুষ শুভেন্দুকে ইঁদুর থেকে বাঘ করেছিল। সেই মানুষই ফের তাঁকে ইঁদুর করে দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন নিয়ে নেতা হওয়ার পর তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করে নাম লিখিয়েছেন বিজেপির দলে। এই বিশ্বাসঘাতক, মিরজাফর, জগত্‍ শেঠদের বাংলার মানুষ ক্ষমা করবেন না।’ শুভেন্দু দলবদল করায় এদিন ফিরহাদ থেকে সৌগত সকলেই রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি ও তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরিকে সামনে এনেছেন এদিন। শিশির অধিকারি বা শুভেন্দু নয়, পূর্ব মেদিনীপুরে মমতার সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই লড়েছেন অখিল গিরি একথা বলে সৌগত বলেন, ‘শুভেন্দু আজ মীরজাফরদের দলে নাম লেখালেন। তৃণমূল হওয়ার পর ২০০১ ও ২০০৪ সালের নির্বাচনে হেরেছিলেন তিনি। তিনি মোটেই বড় পালোয়ান নয়, এর চেয়ে অখিল গিরি বড় পালোয়ান। মমতার সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই রয়েছে অখিল। সরস্বতীর বরপুত্রকে ছাড়াই জিতেছে অখিল, সুপ্রকাশ সকলে।’ অন্যদিকে, ফিরহাদ বলেন, ‘সুপ্রকাশ যদি না ডাকত, তা হলে বুঝতে পারতাম না কাঁথি মমতার সঙ্গে রয়েছে। অখিল ও সুপ্রকাশ এখন দলকে নেতৃত্ব দেবেন। এখন সকলেই দিদির ভাই হয়ে থাকতে পারবে। কারও প্রজা হতে হবে না।’ পুরমন্ত্রীর একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘কোলাঘাট থেকে ঢুকতেই দেখছি নির্মল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। কারও বোঝা বইতে হবে না। সকলেই এখন স্বাধীন, সকলেই রাজা।’ পাশাপাশি, পরিবারতন্ত্র নিয়ে শুভেন্দুকে নাম করে বিঁধেছেন তৃণমূল নেতারা। সৌগত রায় এদিন বলেছেন, ‘ওঁর বাবা শিশির অধিকারি কাঁথি দক্ষিণ সিটটা ছেড়ে দিয়েছেন শুভেন্দুকে। ও এমন কিছু নয়। মমতা শুভেন্দুকে জিতিয়ে মন্ত্রী করেছেন। ফলে ও কাগুজে বাঘ। আমি অভিষেক, প্রশান্ত কিশোর ও শুভেন্দুকে একসঙ্গে বসিয়েছিলাম। মুখোমুখি বসে বলল অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু আবার বলছে অভিষেক তোলাবাজ। শুভেন্দু রাজ্যের রাজনীতির মানকে নামিয়ে দিয়েছে। শুভেন্দু বিশ্বাসঘাতক। ওকে কখনও ক্ষমা করব না।’ ফিরহাদ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি করে কেন শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিল। নিজেকে জেল থেকে বাঁচাতে না কি উচ্চাকাঙ্খা তাঁকে শেষ করে দিল। ও এখন পরিবারতন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু ওঁর বাবার নাম শিশির অধিকারি। তিনি না থাকলে ও সাধারণ কর্মী হয়েই থাকত। বরং আমার বাবা-মা কেউ রাজনীতি করেনি। তাই সিঁড়ি দিয়ে আমি উঠেছি। লিফট দিয়ে শুভেন্দু উঠেছে। বিজেপিতে পীযূষ গোয়েল, অনুরাগ ঠাকুর, পুনম মহাজন, প্রিয়ঙ্কা মুন্ডে, জয় শাহ সকলেই পরিবারতন্ত্রের উদাহরণ। সেই তালিকায় এখন যুক্ত হলেন তিনিও।’ ববি হাকিম এদিন স্পষ্টই জানান, সমগ্র বাংলার মত কাঁথিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে। শুভেন্দু নিজের স্বার্থে অমিত শাহের পা ধরেছে। তাই পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টা সিটই তৃণমূল জিতবে এবারও।

https://www.facebook.com/HakimFirhad/videos/216957306714093