জেলা

খড়দহ জনসভায় দিশাহীন শুভেন্দু! ফের ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ মমতা ও অভিষেক-কে

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আশ্রয় নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু কেন দল ছাড়লেন তা নিয়ে কখনই খুব একটা খোলসা করে কিছু বলতে তিনি পারেননি। তাঁর অপ্রাপ্তি বলতে ছিল শুধুমাত্র দলের সর্বোচ্চ পদ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ। তাই ধরেই নেওয়া হচ্ছে এই দুইটি পদ পেতেই তাঁর জার্সি বদল। এরই সঙ্গে সময় যতই এগোচ্ছে ততই ফাঁস হচ্ছে চক্রান্তের জাল। নিজেই জানিয়েছেন ২০১৪ সাল থেকেই অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। আবার যে দলে গিয়েছেন সেই দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ভরা হাটে হাঁড়ি ভেঙে জানিয়ে দিচ্ছেন কীভাবে দলের পিছনে ছুরি মেরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে না গিয়ে বিপক্ষের প্রার্থীকে জিতিয়ে দিয়েছেন তিনি। বাংলার মানুষ সব দেখছে, শুনছে, বুঝছে। আগামীদিনে তাঁরাই এর বিচার করবেন। কিন্তু যিনি এই বিশ্বাসঘাতকতা করে জার্সি বদল করলেন তাঁকে এখন কার্যত দিশাহীনই মনে হচ্ছে। কারন ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করা ছাড়া তাঁর আর কোনও লক্ষ্য চোখে পড়ছে না। পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করা ছাড়া যার রাজনীতিতে আর কোনও মোটো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এবার খড়দহে সেই দিশাহীণ কদর্যতার নিদর্শন রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়া ইস্তক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের পাশাপাশি মমতা ও অভিষেককে। কিন্তু তাঁর মুখ থেকে এখনও উন্নয়নের কোনও বুলি শোনা যায়নি। এদিন সন্ধ্যাবেলায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ব্যারাকপ্যর মহকুমার টিটাগড়ে ছিল শুভেন্দুর র‍্যালি ও খড়দহে ছিল জনসভা। সেই র‍্যালি ও জনসভাতে এদিন শুভেন্দু ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, সাংসদ অর্জুন সিং, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও মুকুল পুত্র বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। টিটাগড়ের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বিজেপির রোড শো শুরু হয় যা শেষ হয় খড়দহে গিয়ে। সেখান থেকেই তৃণমূল তথা মমতা ও অভিষেককে আক্রমণ শানেন তিনি। বলেন, ‘রাজ্যে সিন্ডিকেট তোলাবাজির সরকার চালাচ্ছে বুয়া-ভাতিজা। সেই বুয়া-ভাতিজার সরকারকেই হারাতে মাঠে নেমেছি। এই সরকার আর ফিরবে না। পিসি ভাইপো সরকারের যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের হিন্দিভাষী মানুষকে বহিরাগত বলছে রাজ্য সরকার। দেশের সর্ববৃহত্‍ দলের সভাপতির গাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে। এটা লজ্জার।’ নাড্ডার কনভয়ের হামলার প্রসঙ্গ টেনেই শুভেন্দু এদিন আক্রমণ করেন রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকেও। বলেন, ‘মনোজ বার্মা, অজয় ঠাকুর, রাজীব কুমার সিবিআই সুপ্রিম কোর্ট গিয়েছে। মাননীয় ভাইপো, সুপ্রিম কোর্টের এফিডেফিট পড়ুন না। থুতু তো উপরে ফেলছেন, নিজের গায়েই পড়ছে। এই তো ভাষা, এই তো সংস্কৃতি। আমরা ভারতীয় আগে। আঞ্চলিক দল করব না, বোকা নই আমরা। ছোটাবো ভাল করে। তখন বুঝবে কত ধানে কত চাল হবে। পাড়ায় পাড়ায় সমাধান, ভাঁওতাবাজির নতুন নাম। যমের দুয়ারে সরকার।’ এর আগে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘যে নিজের বাড়িতে পদ্ম ফোটাতে পারে না সে নাকি বাংলায় পদ্ম ফোটাবে। লজ্জা করে না!’ সেই সূত্র টেনেই পাল্টা শুভেন্দু বলেন, ‘আমি বলছি বাবুসোনা, আমি তো অকৃতদার। এখনও তো বাসন্তী পুজো আসেনি, রামনবমী হয়নি। ফুটবে তো। আমার বাড়ির লোকেরাও পদ্ম ফোটাবে। তোমার বাড়ির ভিতরেও ঢুকবো।’