গত ২৮ ডিসেম্বর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সই করা সেই নির্দেশিকায় কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সৌমেন্দু অধিকারীকে। এবার তাকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন অধিকারী বাড়ির ছোট ছেলে। সৌমেন্দু আদালতে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, যে ভাবে তাঁকে অপসারিত করা হয়েছে তা বেআইনি। এদিন কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলা গ্রহণ করেছে। আগামী ৪ জানুয়ারি ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। প্রখ্যাত আইনজীবী তথা সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, সরকারের ক্ষমতা রয়েছে, পুর প্রশাসককে অপসারিত করার। কিন্তু তার একটা নিয়ম রয়েছে। যে ভাবে বা যে উদ্দেশ্যে কাঁথির প্রশাসককে সরানো হয়েছে তাকে খুব একটা সত্ বলে মনে হচ্ছে না। আইনজীবীদের অনেকের বক্তব্য, সৌমেন্দুকে সরিয়ে যাঁকে প্রশাসক করা হয়েছে তিনি কাঁথি পুর এলাকার বাসিন্দাই নন। পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার। ফলে তিনি কোনও ভাবেই প্রশাসক হতে পারেন না। শুভেন্দু বিজেপিতে গেলেও তাঁর বাড়ির বাকি দুই তৃণমূল সাংসদ অর্থাত্ বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও দল ছাড়ার কথা বলেননি। সৌমেন্দুও তেমন তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি এই সময়ে। ফলে অনেকের মতে, শাসকদল তথা রাজ্য সরকার শুভেন্দুর রাগ বাকিদের উপর মেটাচ্ছে। কাঁথি পুরসভার সঙ্গে অধিকারী পরিবারের সম্পর্ক পাঁচ দশকের বেশি সময়ের। প্রবল প্রতাপে যখন বাংলায় বাম শাসন চলছে তখনও কাঁথি ছিল অধিকারীদের গড়। একবার পুরভোটে তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে প্রচারে নিয়ে গিয়েছিল সিপিএম। তাও কাঁথিতে দাঁত বসাতে পারেনি। ভাইকে অপসারণ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু বলেন, ‘অত্যন্ত অন্যায় হল। আমি এখনও তৃণমূলে আছি। দলনেত্রীর প্রতি এখনও শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু রাজ্য সরকার যে কায়দায় অপসারণ করেছে দিব্যেন্দুকে তার আমি নিন্দা করছি।’