মঞ্চে তখন শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কীভাবে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে, সেই পরিসংখ্যানই তুলে ধরছিলেন তিনি। কিন্তু মন্তব্যে হঠাৎই তাল কাটে। সভায় উপস্থিত আম জনতা হঠাৎই নিজেদের জায়গা ছেড়ে উঠে পড়েন। চারদিক থেকে গন্ডগোলের আওয়াজ ভেসে আসে।এদিন বক্তব্য চলাকালীন আচমকা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আম জনতাকে বিচলিত হতে দেখে প্রথমে খানিকটা অবাকই হয় কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ঠিক কী হল, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। বিজেপি নেতা মঞ্চে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন করতে থাকেন কী হয়েছে?এত সব প্রস্তুতির পরও না দেখানো গেল শক্তি। হঠাৎ মঞ্চ তাঁক করে ঢিল ছোড়া হতে থাকে। বাইরে ‘চোর–চোর’ স্লোগান। দেখা যায়, দলে দলে লোক মঞ্চের ওপর উঠে আসছেন। চেয়ার তুলে আছাড় মারতে শুরু করেন কেউ কেউ। ঠিক সেই সময়ই এগিয়ে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। গন্ডগোলের কারণ তখনও স্পষ্ট হয়নি। মাইকে ক্রমাগত জনতার উদ্দেশে বলা হয়, ‘কিছু হয়নি। শান্ত হয়ে বসুন।’ স্লোগানে গলা মেলানোর আহ্বানও জানানো হয়। কিন্তু বিশৃঙ্খলা যে তখনও থামেনি, তা ঝিমিয়ে পড়া আওয়াজেই স্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল সে সময় জনসভায়? জানা গিয়েছে, বসা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন অনেকে। সেখান থেকই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। শোনা যাচ্ছে তারা দিলীপ এবং শুভেন্দু গোষ্ঠীর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাইক হাতে আসরে নামেন শুভেন্দু অধিকারী পরে নিজে বক্তব্য রাখার সময় শুভেন্দু অধিকারী সভার উদ্দেশে ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ করেন। ঢিল ছুঁড়ে সভা ভন্ডুল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সভায় উত্তেজনা ছড়াতেই অশান্তির আশঙ্কায় মঞ্চেও আঁটোসাটো করা হয় নিরাপত্তা। মঞ্চেই বিজেপি নেতৃত্বকে ঘিরে থাকতে দেখা যায় RAF ও নিরাপত্তারক্ষীদের। তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে আসতে চাওয়া নেতাদের যোগদানের পালাও বন্ধ হয়ে গেল মাঝপথে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের দেখা গেল, তাঁরা মাইক বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছেন! এদিন দলবদলের পর এদিন নন্দীগ্রামে শক্তি প্রদর্শন করতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু। ডেকেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি মুকুল রায়, বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। মঞ্চ গরম করতে জনসভায় নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের একটা বড় অংশকেও দেখা গিয়েছিল এদিন। বিজেপির দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবেই এই বিরাট জনসভা ভণ্ডুল করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভয় পেয়েই তৃণমূল এসব করছে বলেও তোপ দাগেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সত্যি কি তাই, উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের নেতাদের দলে দলে যোগদানে রীতিমতো ক্ষিপ্ত পুরনো নীচুস্তরের বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের মঞ্চে দেখতে পেয়েই তাঁরা ক্ষেপে বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা ক্ষেপে গেছেন।