হক জাফর ইমাম, মালদাঃ বেআইনিভাবে স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রতিবাদে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা বুধবার মৌন মিছিল করে পুলিশ সুপার অজয় প্রসাদকে স্মারকলিপি প্রদান করেন।মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আন্দোলন । এই আন্দোলনের জেরেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে গিয়ে রাত ১১টা নাগাদ মালদা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন উপাচার্য স্বাগত সেন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি। ছাত্র ছাত্রীদের অভিযোগ,ঘেরাও-এর নামে উপাচার্যকে হেনস্তা করছে বহিরাগতরা। শিক্ষার পরিবেশকে কলুষিত করছে তারা ।। গোটা ঘটনা নিয়ে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অস্থিরতার জন্য বর্তমান কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। কেন বেআইনি ভাবে এক ছাত্রকে পরীক্ষা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে ভর্তি নেওয়া হল তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর বলে একটি সূত্রের খবর। অন্যদিকে বেআইনিভাবে ছাত্র ভর্তির বাতিলের দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা থেকে উপাচার্যের ঘরের সামনে চলছে তাদের বিক্ষোভ অবস্থান। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে ভর্তি বাতিল করতে হবে। মঙ্গলবার রাতে উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তাদের সঙ্গে কথা না বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন । আসলে গোটা ঘটনাটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন মৌন মিছিল করে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অচিন্ত্য কুমার ব্যানার্জি বলেন , বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি ।মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আন্দোলনের নামে কিছু বহিরাগতরা হেনস্থা করেছে উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে। তারা এখন মালদা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, মঙ্গলবার রাতে যে ঘটনা ঘটেছে আমি তার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। ছাত্রছাত্রীরা কাউকে হেনস্থা করে নি। বেআইনিভাবে ভর্তি করা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নেমেছে । এই আন্দোলনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেই । কিন্তু আমরা ছাত্রছাত্রীদের এই ইস্যুকে সমর্থন জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট কারা করছে এটাই তো আমাদের কাছে স্পষ্ট নয় । আমি নিজে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছিলাম । সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু উপাচার্যের অনড় ভাবই এই পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছে। উল্লেখ্য , স্নাতক স্তরের ভর্তির প্রক্রিয়া মেয়াদ ৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যাওয়ার পর জুলোজি অনার্সের এক ছাত্রকে স্নাতক স্তরে ফুড এন্ড নিউট্রিশনে ভর্তি নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রের ভর্তির আগেই বাতিল করে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই ছাত্রকে পুনরায় ভর্তি করার জন্য ৩০ এপ্রিল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক হয় ।ছাত্রছাত্রীরা এই প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে প্রতিবাদে নামেন।