নয়াদিল্লিঃ ওটিটি প্লাটফর্মের মাথায় আগেই সেন্সর বোর্ড বসানোর কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার । এবার সেই কাজেই আরও একধাপ এগিয়ে গেল তারা। শুধু নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজন প্রাইমের মতো ওটিটি নয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা নিউজ পোর্টালে কী কনটেন্ট প্রকাশিত হচ্ছে, তা নজর রাখার জন্যও তৈরি হচ্ছে বিশেষ কমিটি। এই কমিটির সদস্য হবেন বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। ‘দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ঐক্য’ ভাঙতে পারে এমন কিছুও প্রকাশ করা যাবে না। সেজন্য থাকবে নির্দিষ্ট বিধি। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানালেন, এই সব বিধি আসলে সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারদের হাতই শক্ত করবে। কেন্দ্রের তরফে বারবার বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কিছু প্রকাশিত হচ্ছে, যা দেশের ঐক্য নষ্ট করতে পারে। কৃষক আন্দোলনে সেই কাজটাই করছে টুইটার বলে অভিযোগও তুলেছে কেন্দ্র। এবার সেই নিয়ে আরও সক্রিয় হয়ে কিছু পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। ওটিটি, সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাতে তৈরি হল কমিটি।
এই কমিটিতে থাকবে কারা?
প্রতিরক্ষা, বিদেশ, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও সম্প্রচার, আইন, তথ্য প্রযুক্ত, মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা।
কী কী অধিকার রয়েছে কমিটির?
বিধি ভাঙা হলে এই কমিটির সদস্যরা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েই শুনানি চালাতে পারবে। বিধি ভঙ্গকারীদের হুঁশিয়ারি দিতে পারবে। উপদেশ বা তিরস্কার করতে পারবে। ক্ষমাপ্রার্থনাও চাইতে পারে। যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসাররা চাইলে যে কোনও কনটেন্ট ব্লকও করতে পারে।
এর পর থেকে নতুন নিউজ পোর্টালকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে নথিভুক্ত করতে হবে।
একনজনরে দেখে নিন এই নয়া আইন সম্বন্ধে
🔴 মানহানিকর, অশ্লীল, বর্ণবৈষম্যমূলক, সংখ্যালঘুদের ক্ষতি করতে পারে, দেশের ঐক্য, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কে আঘাত করতে পারে এমন কোনও কনটেন্ট পোস্ট করা যাবে না।
🔴 আদালতের নির্দেশ বা সরকারি নির্দেশিকা পাঠানোর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বেআইনি, আপত্তিকর কনটেন্ট সরাতে হবে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে।
🔴 মেসেজ কে পাঠাচ্ছে (অরিজিনেটর অফ ইনফরমেশন), এবার থেকে তাও জানাতে বাধ্য থাকবে সোশ্যাল মিডিয়া মেসেজিং সাইট।
🔴 সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে বা আইন ভাঙলে তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে সমস্ত তথ্য দিতে হবে উদ্দিষ্ট সাইটকে।
🔴অভিযোগ গ্রহণ এবং তার নিষ্পত্তির জন্য সমস্ত সংস্থাকে গ্রিভেন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
🔴 সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ পোর্টাল, ওটিটি প্লাটফর্ম কোড অফ এথিক্স মানছে কিনা দেখার জন্য তিনস্তরীয় নজরদারি কমিটি থাকবে।
🔴 সোশ্যাল মিডিয়া বা নিউজ পোর্টাল নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগও শোনা হবে। সেই অভিযোগ নেওয়ার জন্য থাকবে অনলাইন গ্রিভেন্স পোর্টাল। অভিযোগ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে হবে।
🔴 নেটফ্লিক্স হোক বা অ্যামাজন, নয়তো ফেসবুক বা টুইটার— সব টেক জায়েন্টদেরও গ্রিভেন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে। অবশ্যই ভারতে।
🔴 অভিযোগ এবং তা কীভাবে নিষ্পত্তি হল, সেই রিপোর্ট ছ’ মাস অন্তর খতিয়ে দেখতে হবে।