নিহত বাঘের থেকে আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর
আজ নন্দীগ্রাম দিবস। তাই হাজার অসুবিধা থাকলেও বাড়িতে বসে না থেকে রাস্তায় নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁ পায়ে বড় আঘাত রয়েছে। কিন্তু মানুষ যে তাঁকেই পাশে চায়। নন্দীগ্রামে গিয়েই সম্প্রতি আহত হয়েছেন তিনি। সকালে নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষ্যে টুইট করেছিলেন। শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন সেদিন যাঁরা পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁদের জন্য। তিনি যে পুরোনো ইতিহাস ভোলেন না। তাই তো কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। প্রার্থী হয়েছেন নন্দীগ্রাম থেকেই। কারণ সেখানের মানুষের সর্বক্ষণের সঙ্গী হতে চাইছেন তিনি। যাঁরা তাঁর দিকে তাকিয়ে আছেন। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ গোটা বাংলার মানুষের জন্য তিনি রাজপথে নেমেছেন। সঙ্গী সেই হুইল চেয়ার।রাজনৈতিক ভাবে বার বার বহু কঠিন চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একা হাতে নিজের দলকে কার্যত শূন্য থেকে রাজ্যের ক্ষমতাতেও
নিয়ে এসেছেন তিনি। আজ আবারও তাঁকে দেখা গেল নতুন ভাবে আরও এক চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়াতে। ভাঙা পা নিয়েই এদিন হুইল চেয়ারে বসে কলকাতার রাজপথে নামলেন তৃণমূলসুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর এই হার না মানা মনোভাব দেখেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে জোড়াফুল শিবিরে। সেই কারনেই মেয়ো রোড থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মমতার অনুগামী হলেন হাজারো জনতা। যে পথ তিনি বহুবারই দ্রুত গতিতে পা চালিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন আজ সেই পথই তিনি হাজারো জনতা ও অনুগামীদের নিয়ে পাড়ি জমালেন হুইল চেয়ারে চেপে। নন্দীগ্রাম দিবসে এভাবে পথে নেমে এক দিকে বার্তা দিলেন শহীদ পরিবারগুলিকে। সেই সঙ্গে বিরোধীদের দিকেও ছুঁড়ে দিলেন চ্যালেঞ্জ, ‘আমি হুইল চেয়ারেই, ভাঙা পায়েই আমি সারা বাংলা ঘুরে বেরাবো, আর খেলা হবে।’ তিনি এও বলেন, ‘নিহত বাঘের থেকে আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর।’ এদিন মমতার ওপর হামলার বিরুদ্ধে
অভিষেকের পদযাত্রা হওয়ার কথা ছিল কলকাতায়। মেয়ো রোডে গান্ধিমূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা মোড় অবধি সেই মিছিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানেও মিললো চমক। মিছিলের শেষে সভায় হাজিরা না দিয়ে, কলকাতার রাজপথে নেমে নিজে সামনে থেকে হুইলচেয়ারে বসে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন মমতা। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ফেরার পর এদিনই প্রথমবার প্রচারের ময়দানে নামলেন তৃণমূল নেত্রী। পৌনে দু’টো নাগাদ কালীঘাটের বাড়ি থেকে মেয়ো রোডে পৌঁছন মমতা। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে নীল-সাদা রঙের বিশেষ ভাবে তৈরি হুইলচেয়ারে বসেই রওনা দেন গাঁধী মূর্তির উদ্দেশে। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় জোড়াফুল শিবিরের মিছিল। প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সেই মিছিল শেষ হয় হাজরা মোড়ে।