দেশ

লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিলেই মিলছে সেনার চাকরি, অভিযুক্ত ৭ সেনা অফিসার সহ ২৩

লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিলেই পাওয়া যাচ্ছে সেনাবাহিনীর চাকরি। গত মাসে সেনাবাহিনীর কয়েকজন আধিকারিক এমন অভিযোগ করেছিলেন। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে সিবিআই আধিকারিকরা। আর তদন্তে নেমে সিবিআইয়ের হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এই ঘুষ কাণ্ডে জড়িয়ে রয়েছে সেনা অফিসার এবং সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। দেশের ১৩ টি শহরের ৩০ টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন তথ্য হাতে পান গোয়েন্দারা। দিল্লি, লখনৌ, জয়পুর, গুয়াহাটি, বরেলি, গোরক্ষপুর, বিশাখাপত্তনম, জোড়াহাট সহ আরও নানা শহরে তল্লাশি চালিয়ে অনেক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে যা তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে দাবি সিবিআইয়ের। আর সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসার এবং জওয়ান মিলিয়ে অন্তত ২৩ জন জড়িয়ে রয়েছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে জড়িয়ে রয়েছেন সাতজন উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার, পাঁচ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, একজন সেনা মেজর ও একজন লেফটেন্যান্ট অফিসার। সিবিআই সূত্রের খবর, সেনা অফিসাররাও ছাড়াও ঘুষকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে ১৭ জন সেনা জওয়ানের। তদন্তে যে বিষয়টি উঠে আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে ৬ জন সিলেকশন সার্ভিস বোর্ডের অফিসারের সঙ্গে হাত মিলিয়েই এই দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন সেনা অফিসারেরা। লিখিত পরীক্ষা থেকে  ইন্টারভিউ এবং শারীরিক পরীক্ষা গোটা প্রক্রিয়াটিতেই দুর্নীতি চালাত তাঁরা। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হচ্ছিল। বিভিন্ন শহরে বেশ কিছু এজেন্সিও যাহায্য করত এই কাজে। তদন্তে উঠে আসছে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমভিএসএনএ ভাগওয়ানের নাম। তাঁর পরিকল্পনাতেই গোটা দুর্নীতি প্রক্রিয়াটি চলছিল। তাঁকে এই বিষয়ে যাহায্য করত নায়েব সুবেদার কুলদীপ সিং। মোটা টাকার বিনিময়ে তাঁরা যোগ্যতা নেই এমন ব্যক্তিদের সেনা অফিসারের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও যে তথ্য সামনে আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন শহরে যে এসএসবি সেন্টারগুলি রয়েছে সেগুলি পরিচালনা করতেন বিভিন্ন কর্নেল পদমর্যাদার অফিসারেরা এবং মেজর র‌্যাঙ্কের অফিসারেরা। এই ঘটনা সামনে আসতে সারা দেশে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দেশের নিরাপত্তা যাদের হাতে সেখানেই এমন দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষরাও। সিবিআই জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ১৭ জন সেনাকর্মী ৷ তাঁদের বিরুদ্ধে সার্ভিস সিলেকশন বোর্ডের দ্বারা সেনাবাহিনীতে অফিসার ও অন্যান্য পদের নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ৷ গোয়েন্দা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষা দফতরের ইন্টিগ্রেটেড হেডকোয়ার্টার, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টোরেট জেনারেলের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ৷ গত মাসে সিবিআইয়ে করা অভিযোগে জানানো হয় যে, নয়াদিল্লির বেস হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদনকারীদের থেকে ঘুষ নিয়েছেন কর্মরত সেনাকর্মীরা ৷