কলকাতাঃ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে এ বিষয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি ৷ সাফ জানিয়ে দেন, কোভিড ঠেকাতে অবিলম্বে টিকা দরকার ৷ কেন্দ্র যাতে দ্রুত টিকা পাঠায়, চিঠিতে সেই আবেদনও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্য়ের ভাঁড়ারে একাধিক জীবনদায়ী ওষুধেরও পরিমাণ কমছে ৷ করোনাকালে যা চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর ও চিকিৎসকদের ৷ সমস্য়া সমাধানে এই বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি, অতিমারির আবহে যাতে অক্সিজেনের কোনও অভাব না হয়, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে তাও নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে তাতে তাঁর উদ্বেগ স্পষ্ট ৷ মমতার দাবি, রাজ্য সরকার নিজের খরচে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মানুষকে টিকা দিতে চেয়েছিল ৷ সেইমতো, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠিও দিয়েছিল রাজ্য সরকার ৷ কেন্দ্রের কাছ থেকে টিকা কিনতে চেয়েছিল রাজ্য ৷ কিন্তু কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও জবাব না আসায় তা আর বাস্তবায়িত হয়নি ৷ ২.৪ কোটি মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে ৷ বাকি ৫.৪ কোটি মানুষের টিকাকরণ ৷ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, দ্রুত ৫.৪ কোটি মানুষকে টিকাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা সরবরাহ করুক কেন্দ্র ৷ মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জীবনদায়ী ওষুধ রেমডেসিভির ও টসিলিজুমাবের সরবরাহ নিয়েও ৷ প্রতিদিন রাজ্যে ছয় হাজার ভাওয়াল রেমডেসিভির ও এক হাজার ভাওয়াল টসিলিজুমাব প্রয়োজন হয় ৷ কিন্তু রাজ্যের হাতে মাত্র এক হাজার ভাওয়াল রেমডেসিভির রয়েছে ৷ অন্যদিকে, টসিলিজুমাবের ভাঁড়ার ইতিমধ্যেই শূন্য ৷ এই বিষয়ে তাই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অন্যদিকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, গত বছর লকডাউনের পরে যে সব বিধি মেনে নাগরিক জীবন চালু হয়েছিল, সেই বিধিগুলি কঠোর ভাবে মানতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। কঠোর ভাবে এই বিধি কার্যকর করতে পথে নামবে প্রশাসন। কিন্তু সরকারি নির্দেশগুলি কী ভাবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে নাগরিক সমাজে। কারণ ভোটের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে করোনা-বিধি ভঙ্গ হলেও কোথাও তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসন সে ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি। আরও অন্তত তিন সপ্তাহ রাজ্যে নির্বাচন বিধি জারি থাকবে। তা হলে আর নাগরিকদের বিধি মানতে বাধ্য করা হবে কোন পথে?
রাজ্য সরকারের সতর্কবার্তা –
- জনসমক্ষে, গণপরিবহণে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
- সপ্তাহে অন্তত একদিন কর্মক্ষেত্র, বাজার স্যানিটাইজেশন।
- অফিস, কর্মক্ষেত্রেও মাস্ক-দূরত্ববিধি বাধ্যতামূলক।
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক ফর্ম হোম বাড়ানোর পরামর্শ।
- মল, হল, মাল্টিপ্লেক্সে স্যানিটাইজেশন, থার্মাল গানের ব্যবস্থা।