হুগলির গোঘাটে বিজেপি কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় নাটকীয় মোড়। পুলিশের দাবি, অন্য কারওর বন্দুক থেকে নয়, নিজেদের জোগাড় করা বন্দুক থেকেই গুলি ছিটকে বেরিয়ে এসে আহত হন এক বিজেপি কর্মী। তারপর তাঁরা পুরো ঘটনা সাজিয়ে দোষ চাপান তৃণমূলের ঘাড়ে। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে আসল তথ্য জানতে পারে। গোঘাট থানার পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলে গিয়ে যায় ওই বিজেপি কর্মীদের। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। বিজেপি কর্মীদের বয়ান শুনে পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তিন বিজেপি কর্মীকে। এর পর গুলি চালানোর কথা তাঁরা স্বীকার করে নেন। স্বীকারোক্তির পর তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি কর্মীরা স্বীকার করেছেন, তাঁদের নিজেদের কাছেই ছিল একটি পিস্তল। তাঁরা প্রথমে ভাদুর এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে মদ্যপান করেন। তারপর বন্দুক নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে লাগে বিজেপি কর্মী শুভময় কুন্ডুর পায়ে। তারপরই তাঁরা ঘটনা সাজিয়ে ফেলেন। অভিযোগের আঙুল তোলেন তৃণমূলের দিকে। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোঘাটের নবাসন এলাকা থেকে ওই বন্দুক-সহ ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। ঘটনায় তিন বিজেপি কর্মীকে রবিবার আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বর্তমানে আহত বিজেপি কর্মী শুভময় কুন্ডু আরামবাগ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। গোঘাট থানার ওসি অনিলকুমার রাজ বলেন, ওরা জেরায় জানিয়েছে, শুভময় ও সুমনরা ভাদুরের জঙ্গলে শনিবার দেবাশিসের সঙ্গে দেখা করতে যায়। সেখানে সবাই মিলে তাড়ি খেয়ে নেশা করে। সেই সময় অসতর্ক মুহূর্তে শুভময়ের হাত থেকে গুলি ছিটকে পায়ে লাগে। এরপরই ওই তিনজন হাসপাতাল ও পুলিসের কাছে দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার মিথ্যা গল্প ফাঁদে। ওই ঘটনায় সুমন সাহানা, সুমন পাখিরা ও দেবাশিসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুভময় সুস্থ হলেই হেফাজতে নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নবাসন গ্ৰামের বাসিন্দা শুভময়ের বাড়ির কাছে কালীমন্দিরের উল্টো দিকে খড়ের পালুই থেকে সেভেন এমএম পিস্তল ও দু’রাউন্ড গুলি পুলিস উদ্ধার করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। গোঘাটের বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ কারক এদিন বলেন, শুভময় বিজেপির আইটি সেলের কর্মী। থানায় বলেছি, বেআইনি অস্ত্র যদি কেউ রাখে, বেআইনি কার্যকলাপ যদি কেউ করে, সে যে দলেরই হোক পুলিস তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। তবে তৃণমূল বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করছে।