সোমবার মন্ত্রীসভার শপথ, প্রথম ক্যাবিনেট মিটিং। তার আগে অধ্যক্ষ মনোনয়নের দিনেই বিধানসভায় প্রথম বক্তব্য রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শনিবার অধ্যক্ষ মনোনয়নের দিনে বিধানসভা বয়কট করেছিল বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বক্তব্য়ে কোভিড রুখতে কেন্দ্রের ব্যর্থতাকে নিশানা করলেন। চাঁচাছোলা ভাষায় বিজেপিকে ভর্ৎসনা করলেন। পাশাপাশি বিনম্র হতে বলে আগামী দিনের পাথেয় বুঝিয়ে দিলেন নবনির্বাচিত বিধায়কদের। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিলেন উপস্থিত বিধায়কদের। ভোট শেষ, মসনদে বসেছেন জনাদেশে। তবু মমতা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না। বাংলা বিজয়ে তৃপ্ত মমতার উবাচ, বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছেন “তাঁদের মেরুদণ্ড আছে। বাংলার মেরুদণ্ড আছে। তাঁরা বলছেন, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য,উচ্চ যেথা শির। জনগণের রায় মেনে নিতে পারছে না বিজেপি । তাই শপথ গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক পাঠিয়ে সরকারকে অসুবিধায় ফেলতে চাইছে ।’’ তাঁর সাফল্যে নারীশক্তি ও তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় রিগিং করেছে বিজেপি ।’’ কমিশনের সাহায্য না থাকলে বিজেপি ৩০ আসনও পেত না বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, ” আজও যাঁরা অহঙ্কারি, তাঁদের পতন অবশ্যম্ভাবী ৷’’ মমতা আরও বলেন, “বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছেন বাংলার মানুষ মাথা নত করে না । মানুষের জয় ওরা মেনে নিতে পারছে না । সেই কারণেই এইরকম করেছে । ২৪ ঘণ্টা শপথ নেয়নি একটা সরকার, ওরা লোক পাঠিয়ে দিয়েছে। বাংলার সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে ।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কোভিড পরিস্থিতিতে বাংলার মানুষের সবার আগে প্রয়োজন টিকা, প্রয়োজন অক্সিজেন । কিন্তু তা দেওয়ার বদলে বিজেপি রাজনীতি করছে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চিঠি লিখেছিলাম যা টাকা লাগবে রাজ্য সরকার দেবে ৷ আমরা সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চাই । কিন্তু কেন্দ্র তা মানেনি । ভ্যাক্সিনেশনের সবটা রাজ্যের হাতে নেই । এটা কেন্দ্রের হাতে । অক্সিজেনের বিষয়টাও আমাদের হাতে নেই । তাও কেন্দ্রের হাতে রয়েছে । দিল্লি সাড়ে সাতশ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাচ্ছে তাতেই আমরা খুশি । কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলার সাড়ে পাঁচশো মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন । এখান থেকে অক্সিজেন অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । কী অপরাধ করেছে বাংলা ! কেন বাংলার সঙ্গে এই বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে ।’’ ডবল ইঞ্জিন সরকার নিয়েও এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, “ডাবল ইঞ্জিন নয়, মানুষ ডাবল সেঞ্চুরি করে দেখিয়ে দিয়েছে । নির্বাচনে ঐতিহাসিক সাফল্য তৃণমূলের ।’’ তাঁর এই সাফল্যে নারীশক্তি ও তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা ৷ ৫০ হাজার কোটি খরচ করে সংসদ ভবন তৈরি নিয়েও কেন্দ্রকে একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে পাইপ দিয়ে যেন টাকার স্রোত বওয়ানো হয়েছে । ওই টাকায় ভারতের সবাইকে নিখরচায় ভ্যাকসিন দেওয়া যেত । মাত্র তিরিশ হাজার কোটি দিলেই ভ্যাকসিন দেওয়া যেত । এদিকে, ৫০ হাজার কোটি খরচ করে সংসদ ভবন তৈরি করা হচ্ছে ।”