কলকাতা

কেন্দ্রের শোকজের জবাব দিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ শোকজের জবাব দিয়ে চিঠি দিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে এদিন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও রাজ্যের তরফ থেকে আলাদা করে একটি চিঠি গেছে কেন্দ্রের কাছে। সেই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সূত্রের খবর, দুই চিঠির বিষয়বস্তুই এক। শোকজের কী জবাব দিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়? নবান্নের তরফে কিছু খোলসা করা না হলেও সূত্র মারফত জানা গেছে কেন্দ্রের প্রশ্নের উত্তরে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই কলাইকুণ্ডায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আলোচনার পরে রিপোর্ট জমা করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই আমরা বেরিয়ে আসি।’ পাশাপাশি তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে যেহেতু তিনি কাজ করেন। তাই তাঁর নির্দেশ মেনেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যশ বিধ্বস্ত দিঘার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। সরকারি কাজেই যেতে হয়েছিল তাঁকে। সুতরাং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে অনুপস্থিতির জন্য শোকজ নোটিস পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫(১) ধারা অনুযায়ী তাঁর কাছে সেই নোটিস পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি আশিস সিং। কেন্দ্রের ওই নোটিসে আরও বলা হয়েছিল, মুখ্য সচিবের জন্য বৈঠকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করা হয়েছিল। তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ নিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ঢুকে কেন তিনি সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যান তা জানতে চাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, দিঘায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় গত ২৮ মে কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘যশ’ সংক্রান্ত তথাকথিত পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ত‍ত্‍কালীন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই তুচ্ছে ঘটনাকে হাতিয়ার করে ‘নোংরা’ রাজনীতিতে নেমে পড়েন প্রধানমন্ত্রী সহ কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে হাজির না থাকার ‘অপরাধে’ বাঙালি আমলাকে সবক শেখাতে আসরে নামেন মোদি ও তাঁর যোগ্য স্যাঙাত তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওইদিন রাতেই আলাপনকে সোমবার সকাল দশটার মধ্যে দিল্লির নর্থ ব্লকে হাজিরার ফরমান জারি করে কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক। কিন্তু রাজ্য সরকার রিলিজ অর্ডার না দেওয়ায় দিল্লি যেতে পারেননি রাজ্যের ত‍ত্‍কালীন মুখ্যসচিব। শুধু তাই নয়, মোদি-শাহের নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে ওই দিনই মুখ্যসচিবের পদ থেকে অবসর নিয়ে নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অবসর নেওয়ার পরেই অবশ্য রাজ্যের অন্যতম কর্মঠ ও যোগ্য আমলাকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।