কলকাতা

‘বাংলাকে বাঁচিয়েছেন, এবার দিল্লিতে বিজেপিকে হারিয়ে দেশ বাঁচাতে হবে’, নবান্নে এসে মমতাকে আর্জি টিকায়েতের

তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই আজ শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি বলে জানান কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত। তিনি মনে করেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও ক্ষমতা রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্নে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে উত্তর ভারতের কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত ও তাঁর নেতৃত্বাধীন এক প্রতিনিধিদল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষন বৈঠকও করেন। রাকেশ টিকায়েত মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানিয়ে বলেন ‘ আপনি বাংলাকে বাঁচিয়েছেন, এবার দিল্লিতে বিজেপিকে হারিয়ে দেশ বাঁচাতে হবে’। বৈঠক শেষে টিকায়েত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘গত ৭ বছর ধরে দেশের উন্নয়ন থমকে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিম জং উনের মতো হয়ে যাচ্ছেন, ফলে কেউই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে পারবেন না। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। রাজার বিরুদ্ধে কথা বলা মানে কি শাস্তি পাওয়া? উনি কি রাজা? পুঁজিবাদী শক্তিকে জবাব দিয়েছে বাংলা। বিজেপিকে কড়া জবাব দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরকার গঠনের জন্য অভিনন্দন। বাংলা যে পথে হাঁটবে, সেই পথ অনুসরণ করবে দেশ। তিন কৃষি আইন বাতিল করতেই হবে, এ দাবিতে আমরা এখনও অনড়। ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময়। তার মধ্যে আইন প্রত্যাহার না করা হলে কৃষকরা অন্য রাস্তা বেছে নেবেন। কমিটির সঙ্গে সরকার বৈঠক করতে রাজি না

হলে আমাদের বিক্ষোভ জারি থাকবে। দেশজুড়ে ফসলের ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ দাম থাকা উচিত। আগামী দিনেও বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি বিরোধী প্রচার চালানো হবে।’ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে আছি। আমাদের অনেক সাংসদ সমর্থন জানাতে সেখানে গিয়েছিলেন। ভুলে যাবেন না সিঙ্গুর আন্দোলন, ভিলে যাবেন না নন্দীগ্রাম গণআন্দোলন। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করার পাশাপাশি যত দিন দাবি আদায় না ততদিন আন্দোলনকে সমর্থন করতে হবে। ফসলের ন্যূনতম দাম নিয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করা হোক। কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলব। ৭ মাস ধরে আন্দোলন চলছে, জোর করে আইন পাস করা হয়েছে। কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে, এটা আমাদেরও দাবি। জোর করে কৃষকের জমি নেওয়া উচিত নয়। জোর করে কৃষকদের জমি নেওয়ার বিরোধী আমি। এ রাজ্যে এ জন্য আইনও তৈরি করেছি। তিন কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হোক।’ এর পাশাপাশিই এদিন কোভিড প্রসঙ্গে মোদিকে

আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত কেন্দ্রে কোভিড নীতি পরিষ্কার নয়। উত্তরপ্রদেশ এবং‌ বিহারে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে কোভিড মৃতদের দেহ। এ ভাবে দেশ চলে। ক্ষমতায় এসে থেকে বিজেপি খবরদারি চালাচ্ছে। কালো আইন আনা ছাড়া কোনও কাজ নেই। নোটবন্দির ঢঙে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতে চাই বিজেপি। কিন্তু আমাদের আটকাতে পারবে না। দেশের গনতন্ত্র রক্ষা করতে, দেশের কৃষক, শ্রমিক, যুবদের বাঁচানোর জন্য সবাইকে এক হতে হবে। যারা বিজেপির পুরনো নেতা। তাঁরাও এই কাজে যোগ দিতে পারেন। বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের মোকাবিলায় সমস্ত বিরোধী রাজ্যগুলিকে জোট বাঁধতে হবে যেন এক রাজ্যেকে বিজেপি আক্রমণ করলে, বাকি রাজ্যগুলিকে যেন রুখে দাঁড়াতে পারে। ভাষণ ছাড়া কিছুই দেন না প্রধানমন্ত্রী। টিকা এতদিন কেন দেওয়া হল না? কোভিডের টিকায় জিএসটি বসানো অপরাধ। জীবন-মৃত্যু নিয়ে খেলা করা। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে।’ ইউপিএ-কে নেতৃত্ব দেবেন এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এমনই প্রশ্ন ধেয়ে এসেছিল মমতার দিকে। তার জবাবে বাংলার অগ্নিকন্যা শুধু এটুকুই জাবিয়েছেন, ‘আমি শুধু মোদিকে তাড়াতেই চাই।’

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/2893339424221346