কলকাতা

মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দিল্লির পথে ধনকড়

আজ সন্ধ্যায় দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। আর সেটাও ৩দিনের জন্য। তাঁর এই সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্‍ করার পাশাপাশি দেখা করতে পারেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও। তবে সেই সাক্ষাতের প্রেক্ষাপট ও প্রয়োজনীতা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, রাজ্যপালের এই দিল্লি যাত্রা আর দেশের ৩ প্রধান সঙ্গে সাক্ষাত্‍ নেহাত রুটিন ভিজিট নয়। এটা বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারিরই নীল নকশার অঙ্গ। তবে সেই দিল্লি যাত্রার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই চিঠিতেই তিনি লিখলেন নির্বাচন পরবর্তী রাজ্যের বিরোধীদের ওপর ক্রমাগত হিংসা আর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রিসভায় আলোচনা করতে। ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে রাজ্যকে লাগাতার আক্রমণ করেই চলেছেন ধনকড়। গতকালও শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে সেই অভিযোগও করেছেন। দেখে শুনে মনে হচ্ছে রাজ্যে বিজেপির শীর্ষ নেতা ভাষণ দিচ্ছেন রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। এরপরই এদিন তিন দিনের জন্য দিল্লি যাচ্ছেন ধনকড়। যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে গেলেন চিঠি। তাতে আবার রীতিমত হুকুম জারি করে গিয়েছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এই নির্দেশ রাজ্যপাল আদৌ দিতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তো আছেই, কিন্তু তার থেকেও বড় প্রশ্ন দিল্লি যাওয়ার আগে রাজ্যপাল এই চিঠি দিয়ে গেলেন কেন? সেই প্রশ্নটা কিন্তু উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এই চিঠি আদতে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পথে প্রাথমিক ধাপ! কেন না এই চিঠিই রাজ্যপালের কাছ থেকে জমা পড়বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতি ভবনে। পরে এই চিঠি ও তার বিষয়বস্তুকে হাতিয়ার করেই বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে পারে মোদি সরকার। তাই দিল্লি যাত্রার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া ধনকরের চিঠি কার্যত রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির বৃহত্তর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে যে, বিজেপি চাইছে বাংলাকে ভেঙে উত্তরবঙ্গকে বিধানসভা যুক্ত পৃথক কেন্দ্রশাসিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করুক কেন্দ্র সরকার। কিন্তু সেই পথের কাঁটা নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার। সেই সরকার যা কিনা রাজ্যের জনগণ দ্বারা নির্বাচিত ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী যুক্তরাষ্ট্রীয় আইন মোতাবেক। সেই সরকারটিকে ক্ষমতায় রেখে বাংলা ভাগের চক্রান্ত কখনই সফল হবে না। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল নবান্ন থেকে যে বার্তা দিয়েছেন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী। আইনে বলা আছে দেশের কোনও রাজ্যকে ভেঙে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্র শাসিত এলাকা করতে হলে সংশ্লীষ্ট রাজ্যের অনুমতি চাই। কিন্তু এই বাধ্যকতা তখনই থাকে যখন রাজ্যে সরকার থাকে। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকলে কিন্তু এই বাধ্যকতা থাকে না। তখন কেন্দ্র সরকার একক ভাবে ক্ষমতা নিতে সক্ষম। ঠিক যেভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে প্রথমে রাষ্ট্রপতি শাসন ও পরে সেই শাসনকালেই কাশ্মীরকে ভেঙে ২-৩ ভাগে ভাগ করে দেওয়া। বাংলার ক্ষেত্রেও মোদি-শাহরা সেই পরিকল্পনাই নিচ্ছেন, ধাপে ধাপে। এমনই মত রাজনৈতিক মহলের।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1404754983342395396