নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করেছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী । ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮০, ৮০এ, ৮১, ১০০ এবং ১২৩ ধারায় মামলা করা হয়েছে । আদালতের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী ঘুষ দিয়েছেন। প্রভাব খাটিয়েছেন। জনগণের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সাহায্য নিয়েছেন এবং বুথ দখল করেছেন। সেই মামলার শুনানি আপাতত ৭ দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আগামী বৃহস্পতিবার হবে নন্দীগ্রাম মামলার পরবর্তী শুনানি । বিচারপতি জানিয়েছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় আদালতে মামলাকারীর হাজিরা বাধ্যতামূলক । হাজির না হলেও আদালতে যথাযথ কারণ দেখাতে হয় । সেই সূত্রে মমতারও আদালতে হাজির হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখালেন হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। কিন্তু কেন? নন্দীগ্রাম মামলায় বিচারপতি হিসেবে কৌশিক চন্দ দায়িত্ব নেওয়ার পরই ডেরেক ও ব্রায়েন, কুণাল ঘোষের মতো নেতারা বেশ কয়েকটি ছবি ট্যুইটারে শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির লিগাল সেলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন কৌশিক চন্দ। সেখানে তাঁকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশেও বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। সেই ছবি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী আবেদন করেছেন, এই বিষয়টির মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি অন্য বেঞ্চে করা হোক। আর এবার সেই বিষয়টি তুলে ধরে কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের একাংশের দাবি, বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপি-র ‘সক্রিয় সদস্য’ ছিলেন। আর এদিন তাঁর এজলাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলাটি উঠতেই মুখে কালো মাস্ক এবং হাতে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না’। সংবাদমাধ্যমের সামনেও তাঁরা ওই মামলা থেকে বিচারপতি চন্দকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। অন্যদিকে, বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে মামলা অন্যত্র সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আর্জি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী।