করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের গ্রাফ নিম্নমুখী, অথচ এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনা ভাইরাসের নয়া স্ট্রেন। ডেলটা প্লাস, ইতিমধ্যেই এটিকে উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ডেল্টা প্লাস। এই মুহূর্তে মোট ৪০ জন আক্রান্তকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। বিশ্বজুড়ে ৯টি দেশে এই মুহূর্তে দাপট চালাচ্ছে করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতি। ব্রিটেন সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও ডেল্টা প্লাস-এর কারণে তৃতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়েছে সেই দেশে। বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন, করোনার এই রূপান্তরিত প্রজাতি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি এর সংক্রমণ ঠেকানো বহু দেশের সাধ্যের বাইরে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, পোলান্ড, সুইৎজ়ারল্যান্ড, জাপান-সহ ৯টি দেশ তটস্থ ডেল্টা প্লাস-এর ভয়ে! পরিস্থিতি সামলাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়। যেসমস্ত জেলায় ডেল্টা প্লাস-এর খোঁজ মিলেছে, সেই রাজ্যগুলিকে কড়া ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। করোনার এই প্রজাতি নিয়ে মহারাষ্ট্র, কেরল এবং মধ্যপ্রদেশকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। গত ১৬ জুন প্রথম ডেল্টা প্লাস-এর খোঁজ মেলে মধ্যপ্রদেশে। এর পরেই মহারাষ্ট্রে ২১ জন এবং কেরলে ৩ জনের শরীরেও পাওয়া যায় এই স্ট্রেন। সূত্র অনুযায়ী, এই তিন রাজ্যের একাধিক করোনা আক্রান্তের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করার পর ধরা পড়েছে, কাদের কাদের শরীরে রয়েছে এই স্ট্রেন। বুধবার মহারাষ্ট্র, কেরল ও মধ্যপ্রদেশকে চিঠি দিয়ে তাই সতর্ক করল কেন্দ্র। মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি ও জলগাঁও, কেরলের পলক্কড় ও পঠানামথিট্টা এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপাল ও শিবপুরী জেলায় পাওয়া গিয়েছে ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনে আক্রান্ত করোনা রোগীর হদিশ। নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পলের বক্তব্য, খুব কম সময়ের মধ্যে এই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ায়। সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অন্যান্য স্ট্রেনের তুলনায় এর বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতে মূল যে দুটি টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে, কোভিশিল্ড আর কোভ্যাক্সিন, এই দুটি ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম। কিন্তু সবচেয়ে শক্তিশালী ডেল্টা প্লাস-এর বিরুদ্ধে এটা আদৌ কার্যকরী কি না, সে সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের বক্তব্য, ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য এখনও জানা যায়নি। টিকা কাজ করবে কি না, এই বিষয়ে কয়েকদিনের মধ্যে সবিস্তারে জানানো হবে। তিন রাজ্যকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতেই কেন্দ্র উল্লেখ করেছে, মারাত্মক শক্তিশালী ডেল্টা প্লাস ফুসফুসের ক্ষতি করে সবচেয়ে বেশি। সংক্রমণ ছড়ালেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এক ধাক্কায় কয়েকগুণ কমে যায়। এই তিন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানানো হয়েছে, অবিলম্বে এই এলাকাগুলোকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে যেন ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি করোনা রোগীদের গতিবিধি লক্ষ্য করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডেল্টা প্লাস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে কেউ এলে তাঁদেরও পরীক্ষা করানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।