এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সরাসরি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবিধান বহির্ভূতপথে অনৈতিকভাবে বিধানসভার পরিষদীয় কাজে নাক গলাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিধানসভায় পাশ হওয়া প্রয়োজনীয় জনস্বার্থের বিলগুলিও অকারণে আটকে রাখছেন, ইচ্ছা করেই ফেরত পাঠাচ্ছেন। আর রাজ্যপালের এমন আচরণ ও সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন,যা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে না।’’ শুধু তাই নয়, বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিল ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্যপাল ফেরত পাঠাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন বিমান। তিনি বলেন, ‘‘বিল পাশ করে পাঠানো হলেও, রাজ্যপালের অনুমতি মিলছে না। সই না করেই বিল ফেরত পাঠাচ্ছেন তিনি।’’ দেশের সমস্ত রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষদের নিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার ভারচুয়াল সভায় বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ জানালেন রাজ্যের স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বিধানসভার ইতিহাসে কখনও কোনও রাজ্যপাল এমন এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে পরিষদীয় কাজকর্মে ও গরিব মানুষের স্বার্থে পাশ হওয়া বিল রুখতে কখনও হস্তক্ষেপ করেননি। উলটে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হয়ে অনেকেই রাজ্য সরকার ও বিধানসভাকে সাহায্য করেছেন।” স্বভাবতই কেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রীর তিন দফা চিঠি, সাংসদদের দাবির পাশাপাশি এবার রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের একেবারে সংসদের অধ্যক্ষ ওম বিড়ালকে অভিযোগ জানানোয় আরও চাপে পড়ে গেল রাজভবন। কিন্তু আট দফায় ভোট করে যে কোভিডের ছোবলে বাংলায় অসংখ্য মানুষের পাশাপাশি সাতজন বিধায়ককেও এই বিধানসভা হারিয়েছে, তাও উল্লেখ করেন তিনি। কমিশনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে স্পিকার দাবি করেন, একাধিক বড় রাজ্যে মাত্র এক দফায় ভোট হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী দুই অথবা তিনদফায় ভোট গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও কমিশন তা গুরুত্ব দেয়নি। স্বভাবতই প্রায় দু’মাস ধরে নির্বাচন চলায় মিটিং-মিছিল ও বহিরাগতরা এসে পাড়ায় পাড়ায় দাপিয়ে বেড়ানোয় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। বস্তুত এই কারণে ভোটের সময় ও পরে বহু নিরীহ মানুষের পাশাপাশি সাতজন বিধায়ক অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। এমনকী জয়ী হওয়া দুই বিধায়কও কমিশনের এমন ভূমিকার জেরেই গত এক মাসে মারা গিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার।