গতবারের মতো এবারও কড়া নিয়ম থাকবে দুর্গা পুজোয়। অতিমারী পরিস্থিতিতে বিধি নিষেধ মেনেই এবারও পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। বাঙালির দুর্গাপুজো বলে কথা। আর বাঙালির এই আমেজে যাতে ভাটা না পড়ে সেই জন্যই গতকাল ফোরাম ফর দুর্গোত্সব কমিটির একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই পুজো সংক্রান্ত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর আর মাত্র ৯৪ দিন বাকি। গত বছরের মত এবছরও করোনা বিধি মেনেই হবে পুজো উদযাপন। তবে জনপ্রিয় এই উত্সব উদযাপনে কি কি কোভিড বিধি মানা হবে তা নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল কলকাতার ফোরাম ফর দুর্গোত্সব কমিটি। সেই বৈঠকেই ৭ দফার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে সর্বপ্রথম এবং প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ভ্যাকসিনের ওপর। সেই কারণেই রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও জানানো হয়েছে। যারা মণ্ডপে থাকবেন ও যে সকল দর্শনার্থী মণ্ডপে প্রবেশ করবেন তাঁদের অতি অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে বলা হচ্ছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সেইসঙ্গে মণ্ডপের প্রবেশের মুখেই স্যানিটাইজ করার গেট বসানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে গতবার খোলা প্যান্ডেলে হয়েছিল পুজো। এবারও তেমন ব্যবস্থাপনা থাকছে বলে জানিয়েছেন শাশ্বত বসু। এবার ১৫ থেকে ২৫ জনই মন্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন। দূরত্ববিধি মেনেই হবে অঞ্জলির আয়োজন ও ভোগ বিতরণ। প্যান্ডেলের শিখর বেশ উঁচু করা হবে। ক্লাবের ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য একবারে মন্ডপের ভিতরে থাকতে পারবেন। মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্বে থাকা কর্মী, ঢাকী, স্বেচ্ছাসেবী, পুরোহিত, যাঁরা পুজোর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবেন, প্রত্যেকের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হতে হবে। অনেকের ইতিমধ্যেই টিকার দু’টি ডোজ হয়ে গিয়েছে। যাঁরা এখনও টিকা নিয়ে উঠতে পারেননি, ক্লাবের পক্ষ থেকে তাঁদের টিকাকরণের বন্দোবস্ত করা হবে বলেই জানানো হয়েছে। এবারও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এবং মণ্ডপে স্যানিটাইজেশনের যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হবে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ফোরাম ফর দুর্গোত্সব কমিটির ৭ দফার সিদ্ধান্ত –
১) যাঁরা দুর্গাপুজোর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবেন তাঁদের ভ্যাকসিন আবশ্যিক। তাঁদের ক্ষেত্রে দু’টি ডোজ থাকা বাধ্যতামূলক।
২) মণ্ডপে আসা দর্শকদের প্রত্যেকের ভ্যাকসিন সম্পূর্ন কি না, তা ব্যক্তি পিছু দেখা সম্ভব নয়। তাই কমিটির পক্ষ থেকে আবেদন যে সকলে যেন ভ্যাকসিন নিয়ে তবেই আসেন। মানুষ যদি নিজেদের সুরক্ষিত রাখেন, তাহলে পুজো আরও বেশি আলোকোজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
৩) সেই সঙ্গে মাস্ক পড়ে মণ্ডপে প্রবেশ করাও আবশ্যিক।
৪) প্রতিটি মণ্ডপের সামনে বিশেষ করে বড় পুজোগুলির প্রবেশদ্বারে স্যানিটাইজ করার বড় মেশিন লাগানো হবে। ফলে প্রবেশের সময়ই দর্শক নিজেই স্যানিটাইজ হতে পারেন।
৫) কোভিড বিধি মেনেই যাবতীয় পুজোর ব্যবস্থা করা হবে।
৬) কোভিড সুরক্ষা বিধি যাতে সাধারণ মানুষ মেনে চলেন তার জন্য পুজো কমিটির তরফে মাইকিং-এর মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
৭) কমিটির তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে যাতে প্রত্যেকটি পুজো কমিটির সদস্যদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ করা যেতে পারে।