দেশ

প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন রাজ্যপাল কল্যাণ সিং

প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন রাজ্যপাল কল্যাণ সিং। আজ, শনিবার রাতে লখনউয়ের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৯। কল্যাণ সিং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২১ সালের ৩ জুলাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্বাসকষ্ট ও বমি বমি ভাব থাকায় তাঁকে ডা. রাম মনোহর লোহিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছিল। ডাক্তাররা তাঁর রেনাল সমস্যা রয়েছে বলে সন্দেহ করেছিলেন। পরে, তাঁর রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায় এবং তাঁকে উন্নত চিকিত্‍সা ও ব্যবস্থাপনার জন্য সঞ্জয় গান্ধী স্নাতকোত্তর ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসে স্থানান্তরিত করা হয়। ২০ জুলাই পর্যন্ত তার অবস্থা সংকটজনক ছিল। তারপর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। অবশেষে তাঁর জীবন-যুদ্ধে ইতি ঘটল।  ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় তিনি ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর

কুর্সিতে। অর্থাত্‍ তাঁর আমলেই বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। আজ সেখানে উঠছে রামমন্দির। কিন্তু সেই রামমন্দিরের প্রতিষ্ঠার আগেই তিনি চলে গেলেন চির ঘুমের দেশে। কল্যাণ সিংয়ের সঙ্গে আরএসএস-যোগ সেই স্কুলজীবন থেকে। স্কুলে পড়ার সময়ই তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য হন। ১৯৯৬ সালে তিনি উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। আত্রৌলি থেকে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করেন তিনি। তিনি ভারতীয় জনসংঘ, জনতা পার্টি, রাষ্ট্রীয় ক্রান্তি পার্টি এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হিসেবে ওই আসনে আরও নয়টি নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছিলেন। কল্যাণ সিংহ প্রথমবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন ১৯৯১ সালে। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর তিনি পদত্যাগ করেন। ফের ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হন কল্যাণ সিং। ১৯৯৯ সালে তাঁকে সরিয়ে দেয় বিজেপি। তারপরই বিজেপি ছেড়ে তিনি নিজের দল গঠন করেন। ২০০৪ সালে তিনি ফের বিজেপিতে ফিরে আসেন। দলে পেরার পর আর বিধানসভা ক্ষেত্রে নয়, তিনি সংসদীয় ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন। বুলন্দশহর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কল্যাণ সিং। ২০০৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপি ত্যাগ করেন এবং ওই বছরই তিনি

ভারতের সাধারণ নির্বাচনে ইটা থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০১৪ সালে তিনি আবার বিজেপিতে যোগ দেন এবং রাজস্থানের গভর্নর নিযুক্ত হন। রাজস্থানের গভর্নর হিসেবে তিনি পাঁচ বছরের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। এরই মাদে তিনি হিমাচল প্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বেও ছিলেন। ২০১৯ সালে আবার তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০২০ সালে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত থেকে তিনি বেকসুর হন। কল্যাণ সিংহ ১৯৩২ সালে সংযুক্ত প্রদেশের (বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ) আলিগড় জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাংর পরিবার ছিল লোধি সম্প্রদায়ভুক্ত। কল্যাণ সিং ছিলেন হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একজন স্বেচ্ছাসেবক। স্কুলে থাকা অবস্থাতেই সদস্য হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে রাজবীর সিং এবং নাতি সন্দীপ সিংও রাজনীতিবিদ এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য।