দেশ

আফগানিস্তান ইস্যুতে ধীরে চলো নীতি ভারতের, সর্বদল বৈঠকে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে তালিবান। দোহা বৈঠকে যে কথা তারা দিয়েছিল, তা রাখেনি। পরিস্থিতি ভয়ানক।” সর্বদল বৈঠকে ঠিক এই ভাবেই আফগান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তালিবান নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার?’ বিদেশমন্ত্রকের কাছে জানতে চাইল বিরোধীপক্ষ। ‘তালিবান ইস্যুতেও অন্যান্য দেশের মতই ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে ভারত।’ বিরোধীদের জানানো হল বিদেশমন্ত্রকের তরফে, খবর সূত্রের। আফগানিস্তান থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে? কীভাবে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তাও এদিন জানান বিদেশ মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ভারতীয়দের ফেরাতে যেকোনও সাহায্য করবে নয়াদিল্লি।” সূত্রের খবর, বিদেশমন্ত্রীর থেকে সমস্ত তথ্য পেয়ে অনেকটাই সন্তুষ্ট বিরোধীরা। বিরোধী নেতারা নাকি বিদেশমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সাধারণ মানুষকে বের করে আনতে কাজ করছে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো এবং ভিস্তারার মতো বিমান সংস্থা। ভারত ছাড়াও নাগরিকদের তাজিকিস্তান, কাতারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৫ অগাস্টের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৮০০-র বেশি মানুষকে আফগানিস্তান থেকে বের করে এনেছে ভারত। যাঁদের মধ্যে ২০০-র বেশি ভারতীয় এবং ৬০০-র বেশি অন্য দেশের নাগরিক। যাঁদের মধ্যে অনেকেই আফগান শিখ এবং হিন্দু।   জয়শংকর ছাড়াও এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং প্রল্লাদ যোশী। বিরোধীদের তরফে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং অধীর চৌধুরী। এনসিপির শরদ পাওয়ার, ডিএমকের টি আর বালু এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া। তৃণমূলের তরফে হাজির ছিলেন সাংসদ সুখেন্দশেখর রায় এবং সৌগত রায়।  অন্যান্য বিষয়ে বিরোধিতা করলেও আফগানিস্তান ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে সবরকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর তরফে ৷  বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আফগানিস্তান ইস্যুতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন তৃণমূলের দুই প্রবীণ নেতা সাংসদ সৌগত রায় ও সুখেন্দুশেখর রায় ৷ তাঁরা জানান, জাতীয় স্বার্থ সবকিছুর ঊর্ধ্বে ৷ তাই আফগানিস্তান নিয়ে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাকে সমর্থন করবে তৃণমূল ৷ দলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ও ইতিমধ্যেই সেকথা জানিয়ে দিয়েছেন ৷ এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরে ৷ দলের তরফে জানতে চাওয়া হয়, আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, আরও কতজন সেখানে আটকে রয়েছেন ইত্যাদি ৷ একইসঙ্গে জানানো হয়, এখনও সেদেশে বাংলার 125 জন বাসিন্দা আটকে রয়েছেন ৷ তাঁদের যাতে অবিলম্বে উদ্ধার করা হয়, কেন্দ্রের কাছে সেই আবেদন করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ৷ আমেরিকার হস্তক্ষেপে তালিবান জমানার অবসানের পর থেকে সদ্য তালিবানের পুনরুত্থানের আগে পর্যন্ত মধ্য এশিয়ার এই দেশে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছে ভারত ৷ ভারতের টাকায় বহু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে সেখানে ৷ সেই সব প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে, কেন্দ্রের কাছে তাও জানতে চান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা ৷