তিনদিন পরেও ছাত্রদের হাতে ঘেরাও হয়ে রইলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী। এদিনও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ম্যারাপ বেঁধে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ। সেই সঙ্গে এদিন উপাচার্যের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখালো বিশ্বভারতী ছাত্র সংগঠন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন দিলেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সংগঠন, শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরা ও বোলপুর শহরের বাসিন্দারা। তবে সেই ঘটনাতেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে একটি ব্যানার টাঙাতে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। দু’পক্ষের বচসায় রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উপাচার্যের বাসভবন চত্বর। উপচার্যের বিরুধে এসএফআই আগেই আন্দোলন শুরু করেছে। এমনকি ৩ দিন ধরে তাঁদের ধর্না চলছে উপাচার্যের বাড়ির সামনে। সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানাতেই এদিন শান্তিনিকেতনের বকুলতলা মোড় থেকে একটি মিছিল বের করে গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চ। সেই মিছিলে বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা, শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরা, বোলপুর শহরের বাসিন্দারা, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠনের সদস্যরা সামিল হন ও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানান। সেই মিছিলই উপাচার্যের বাসভবন ‘পূর্বিতা’র সামনে এসে সেই বাড়ির গেটে ব্যানার লাগাতে যায়। আর তখনই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে নিরাপত্তাকর্মীরা। শুরু হয় উভয়পক্ষের ধ্বস্তাধস্তি। এরপরেই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘তালিবান উপাচার্য দূর হটো’। সন্দেহ নেই কেন এই তালিবান প্রসঙ্গে এখানে টানা হয়েছে। বিশ্বভারতীর প্রায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর এই যথেচ্ছাচারিতাই এদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছে। উপাচার্য পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বদল না করলে যে আন্দোলন জারি থাকবে তা এদিন আবারও জানিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আর সেই আশঙ্কার জেরেই অশান্তির আঁটসাঁট নিরাপত্তায় মুড়েছে উপাচার্যের বাসভবন। ‘পূর্বিতা’র আশেপাশে লাগানো হয়েছে সিসিটিভিও। আগে ৯টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছিল। শনিবার আরও ৯টি লাগানো হয়েছে। তারপরেও অবশ্য বিক্ষোভ ঠেকানো যাচ্ছে না। বরঞ্চ রাজ্য জুড়ে শিক্ষামহলে বিদ্যুতের সীমাহীন ঔদ্ধত্যকে এখন কড়া ভাষায় নিন্দা করা হচ্ছে।