ভবানীপুর উপনির্বাচনে জনসংযোগে জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিকেল ৪টে নাগাদ ভবানীপুরের গুরুদ্বারে গিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে গুরু গোবিন্দজিকে স্মরণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দর চড়ানোর পর বক্তৃতা দিতে উঠে তিনি জানান, ‘সকলের জন্য শুভকামনা করি, এখানে আমি প্রায়ই আসি। দেখুন, বাংলার সঙ্গে পঞ্জবের একটা সম্পর্ক রয়েছে। এর পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই জাতীয় সঙ্গীতের উদাহরণ টেনে আনলেন। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাতীয় সঙ্গীত শুরু করেছিলেন পঞ্জাবের নাম দিয়ে। শেষ করেছিলেন বাংলায়।’’ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আবৃত্তিও
করেন জাতীয় সঙ্গীতের ওই ছত্রটি-‘‘পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ।’’ আবৃতি শেষ করেই মমতার মন্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার লড়াই সম্পূর্ণই হত না, যদি পঞ্জাব না থাকত। স্বাধীনতার যুদ্ধে বিপ্লবীদের মধ্যে বাঙালি আর পঞ্জাবিদের সংখ্যাই বেশি।’’ কারণ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলা ও পঞ্জাব সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। এই দুই রাজ্যের জন্যই আজ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি, এটা অস্বীকার করার নেই। বাংলার মতই পঞ্জাবের বিপ্লবীদের জন্য এই স্বাধীনতা। আমি আন্দামানে সেলুলার জেলে গিয়ে দেখেছিলাম, সেখানে ফলকে পঞ্জাবি ও বাংলার বিপ্লবীদের নাম বেশি। সেটা ভগত্ সিং হোক, ক্ষুদিরাম বসু,
মঙ্গল পাণ্ডে, সকলের নাম রয়েছে।’ আমি ২০ বছর আগে পঞ্জাবে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রতি গ্রামে গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতিখতিয়ে দেখেছিলাম। সমস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমার সঙ্গে একটা যোগ রয়েছে পঞ্জাবের। যেমন, অভিষেক বিয়ে করে রুজিরাকে, ও পঞ্জাবী। গুরুদ্বারে যায় আবার কালীঘাটেও যায়, বাচ্চাগুলো খুব সুন্দর পঞ্জাবি বলে। আপনাদের হালুয়া খেতে খুবই ভালো লাগে।’ কথা বলেন সেখানকার মানুষদের সঙ্গে। কথা বলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের সঙ্গেও। দেখা গেল তাঁকে ঘিরে সেলফি তুলবেন বলে পঞ্জাবি মহিলাদের ভিড় উপচে পড়ছে। বক্তৃতা শেষ করে বেরনোর পথে পুরুষদেরও বলতে শোনা গেল,
“দিদি এর পর কিন্তু আপনাকে দিল্লিতে চাই।” এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সাংসদ মালা রায় ও ভবানীপুরের নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনেকেই। গুরুদ্বারে কিছু শিখ ধর্মাবিলম্বী মানুষেরা কৃষক আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করেন, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘খুবই অন্যায় করেছে কেন্দ্র। আমি কৃষকদের সঙ্গে রয়েছি। ওদের সঙ্গে দেখাও করেছি। পঞ্জাবে আমার টিম পাঠিয়েছিলাম। আমি প্রত্যেক মিটিং মিছিলে সেই কথাটি তুলি। আমি কৃষকদের পাশে আছি।’ এর আগে দিন একবালপুরে ষোলআনা মসজিদে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।