পেগাসাস কাণ্ড নিয়ে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, এই নিয়ে তদন্তের জন্য কমিটি গড়া হবে। সদস্যদের নিয়োগ করবে সুপ্রিম কোর্টই। পরের সপ্তাহেই দেওয়া হবে রায়। বৃহস্পতিবার জানালেন প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা। রামানা জানালেন, চলতি সপ্তাহেই এই পেগাসাস কাণ্ড নিয়ে রায়দানের কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু তা হচ্ছে না। কারণ তদন্তের জন্য বিশষেজ্ঞ কমিটির সদস্য হিসেবে যাঁদের ভাবা হয়েছে, তাঁদের অনেকেই রাজি হননি। ব্যক্তিগত কারণেই সদস্যপদ নিতে রাজি হননি। তাই দেরি হল। তবে পরের সপ্তাহেই রায়, আশ্বাস প্রধান বিচারপতির। ১৩ সেপ্টেম্বর এই মামলার শেষ শুনানি ছিল। সেখানে সরকার এই মামলার জন্য কমিটি গড়ার প্রস্তাব দেয়। জানিয়েছিল, এই নিয়ে তদন্তের জন্য তারাই কমিটি গড়বে। তার পর সুপ্রিম কোর্টে জমা দেবে। কেন্দ্রের যুক্তি, হলফনামা জমা করে পেগাসাস নিয়ে সমস্ত তথ্য জনসমক্ষে তারা আনতে পারবে না। এতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারা। এর জবাবেই প্রধান বিচারপতি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার কথা আমরা জানতে চাই না। তবে সাধারণ মানুষ যে তাদের ফোন ট্যাপ হওয়ার অভিযোগ জানাচ্ছে, সেই
বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চাই আমরা।’ বাদল অধিবেশন শুরুর আগের দিন একটি সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, দেশে রাহুল গান্ধী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শতাধিক বিরোধী নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সরকারি আমলার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে পেগাসাস স্পাইওয়ারের মাধ্যমে। এই স্পাইওয়ার তৈরি করে ইজরায়েলের সংস্থা। সেই সংস্থা জানায়, কোনও দেশের সরকার ছাড়া কাউকে তারা স্পাইওয়ার বিক্রি করে না। প্রসঙ্গত, দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্টদের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল এডিটর্স গিল্ড (Editors Guild)। এ ছাড়াও পেগাসাস ইস্যুতে তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আরও বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল হয়েছিল। সব মিলিয়ে ১২টি পিটিশন জমা পড়েছে। সংসদের বাদল অধিবেশন জুড়ে পেগাসাস বিতর্ক ছিল শিরোনামের শীর্ষে। বিরোধী নেতাদের দেখা গিয়েছে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে। তাই বহুবারই অধিবেশন মুলতুবি করতে হয়েছে স্পিকার কিংবা চেয়ারম্যানকে। এমনকী, নির্দিষ্ট সময়ের কয়েকদিন আগেই শেষ করে দেওয়া হয়েছিল অধিবেশন। বিরোধীদের দাবি ছিল, ফোনে আড়িপাতা কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তে বিরোধীরা নিজেদেরই জয় দেখছেন।