লখিমপুর কাণ্ডে উত্তর প্রদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট৷ লখিমপুর কাণ্ডে অভিযুক্ত আশিস মিশ্রকে আগামীকাল বেলা ১১টার সময় হাজির দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে ৷ আজ এই মামলার শুনানির শুরুতে সুপ্রিম কোর্টে এই তথ্য দিলেন উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে প্রবীণ আইনজীবী হরিশ সালভে ৷ গতকাল স্টেটাস রিপোর্ট চেয়ে আজ মামলা শোনার কথা জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বে গঠিত ৩ সদস্যের বেঞ্চ, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি হিমা কোহলি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০ অক্টোবর, জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ ততদিন পর্যন্ত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সংরক্ষণ করার জন্য উত্তর প্রদেশ পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷ পাশাপাশি, এখন যাঁরা তদন্ত করছেন সেই অফিসারদেরও সরিয়ে নতুন অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা ফের আশিস মিশ্রকে নোটিস পাঠানো প্রসঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জানান, অভিযুক্তকে শুধুমাত্র নোটিস পাঠিয়ে আসতে বললে হবে না ৷ তিনি বলেন, “তাঁর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ তাই অন্যান্য মামলাগুলিতে বাকিদের জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এক্ষেত্রেও তাই করুন ৷” প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন এই ঘটনার সাক্ষী রয়েছে ৷ আইনজীবী সালভে জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনও গুলির আঘাতের প্রমাণ মেলেনি ৷ তবে দুটো কার্টিজ পাওয়া গিয়েছে ৷ হতে পারে যে অভিযুক্তের কোনও দুরভিসন্ধি ছিল ৷ এতে প্রধান বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “তাহলে কি অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে না নেওয়ার এটাই কারণ ?” সুপ্রিম কোর্ট লখিমপুরে ৮ জনের মারা যাওয়ার ঘটনাকে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করে ৷ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্ব ৩ সদস্যের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করে জানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে ৷এদিন উত্তরপ্রদেশ সরকারকে সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, সরকার যেন অন্য কোনও উপায়ে তদন্ত করার কথা সুপ্রিম কোর্টকে জানায় ৷ প্রধান বিচারপতি উত্তরপ্রদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই কেসের সব প্রমাণ সুরক্ষিত রাখতে হবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত অন্য কোনও সংস্থা এর তদন্ত ভার নিচ্ছে ৷ আর এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন ডিজিপি ৷”সরকারের তরফে হরিশ সালভে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে সুনিশ্চিত করে জানায় যে, এই মামলার সব প্রমাণ নিরাপদে রাখার কথা রাজ্য পুলিশের উচ্চ আধিকারিককে জানানো হবে ৷তবে আজ বেঞ্চ সরকারি আইনজীবীকে এই মামলায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ৷ বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, “আমরা প্রবীণ আইনজীবী সালভের কথা শুনেছি ৷ রাজ্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানিয়েছেন তিনি ৷ স্টেটাস রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে ৷ যাই হোক, আমরা রাজ্যের এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নই ৷”