কলকাতা

আরজিকর নিয়ে এবার কড়া অবস্থান নিচ্ছে রাজ্য সরকার

আরজিকর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের অচলাবস্থা কাটাতে এবার কড়া পদক্ষেপ নেওয়ারই ইঙ্গিত দিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে এদিন সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, হাসপাতালে রোগী পরিষেবা কোনওভাবেই বিঘ্নিত হতে দেওয়া যাবে না। আউটডোর-ইনডোর পরিষেবা মসৃণ রাখতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের। যাঁরা কাজে আসছেন না, তাঁদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে রাখতে হবে। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা আছে। আলোচনা করে রফাসূত্র খোঁজার কাজও চালাতে হবে সমান্তরালে। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে আরজিকর নিয়ে এবার ধাপে ধাপে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে দেবে নবান্ন আর তা নেওয়া হলে কার্যত বিপাকে পড়বেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলন শুরুর পরে ১৫ দিনের মাথায় এখনও আরজিকর হাসপাতালে অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে। অধ্যক্ষের ইস্তফার দাবিতে রিলে অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত মেডিকেল কলেজের পড়ুয়া ও জুনিয়র চিকিত্‍সকেরা। এদিকে হাসপাতালের পরিষেবা সচল রাখতে এদিন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরতে দেখা গিয়েছে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ও মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যালকে। জট কাটাতে এদিন স্বাস্থ্যভবনে স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি মেন্টর গ্রুপের সদস্যরা। অধ্যক্ষের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠন-সহ একাধিক দাবিতে রিলে অনশন করছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া, ইন্টার্ন ও জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। কিন্তু এবার সেই আন্দোলনেই রাশ টানতে চাইছে রাজ্য সরকার। গত কয়েকদিন ধরেই আরজিকর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতির জেরে চিকিত্‍সা পরিষেবা সম্পূর্ণ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিজনদের তরফে। নতুন করে রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে রাশ তো টানা হয়েইছিল, সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদেরও শহরের অনান্য সরকারি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছিল। সেই বিষয় নিয়ে রোগীর পরিজনদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদেরও কানে যায়। এবার বিষয়টিকে দ্রুত সমাধানে নিজেই তত্‍পর হয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সোমবার আরজিকরের মেন্টর গ্রুপকে জরুরি তলব করেন তিনি। স্বাস্থ্যভবনে তিনি নিজে গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকেও বসেন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই তিনি বিক্ষোভরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁদের অভিযোগ শুনে সমাধানের চেষ্টা ঙ্করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হাসপাতালের অন্যান্য জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, এদিন থেকে কোনও রোগীকে রেফারঙ্করা যাবে না। তবে এত কিছুর পরেও আরজিকরের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও সেই দাবিতে সায় দিচ্ছে না রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। শুধু তাই নয়, এদিন স্বাস্থ্য সচিবের নির্দেশ জারি হওয়ার পরেও যদি পরিস্থিতির বদল না হয় তাহলে অতিমারির সময়ে জুনিয়র ডাক্তারদের এই কর্মবিরতিকে বেআইনি ঘোষণা করে আদালতে যেতে পারে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে কাজে যোগ না দেওয়া জুনিয়র ডাক্তারদের ডিউটিতে থাকা নিশ্চিত করতে বিভাগীয় প্রধানদের নির্দেশ দিতে পারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারপরেও ডিউটিতে না থাকলে জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে জারি হবে শো-কজ নোটিস। একই সঙ্গে আটকে দেওয়া হতে পারে ইন্টার্নদের স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন।