টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে লাভা রোডের একাংশ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। ধস নেমেছে একাধিক রাস্তায়। বিমবিক রোডগামী রাস্তায় ভেঙে পড়েছে সেতু। মাটিগাড়ায় বালাসন নদীর ওপর সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে গাজলডোবা থেকে দফায় দফায় জল ছাড়া হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ফুঁসছে তিস্তা। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে নদীর জল। ভাসছে সেবক রোড। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন। জলপাইগুড়িতে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। সোমবার রাত থেকেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শুরু হয়েছে লাগাতার বৃষ্টি। মঙ্গলবার সারাদিন একটানা বৃষ্টির পর বুধবারও অব্যাহত। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এদিনও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। তার আগেই এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২ টি জায়গায় ধস নেমেছে। ধসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। বন্ধ ট্রয়ট্রেনও। বুধবার সকালে নতুন করে দার্জিলিঙের বিজনবাড়ি, রিমবিক এলাকায় ধস নেমেছে। ধসের জেরে কালিম্পং এবং কার্শিয়াঙের বহু এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ
হয়েছে। আটকে পড়েছেন প্রচুর পর্যটক। শিলিগুড়ি-সিকিম রোডে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ২৯ মাইল, ১০ মাইল, ১১ মাইলের মতো জায়গার অবস্থা ভয়াবহ। মাটিগাড়ায় বালাসন নদীর ওপর সেতু ফেটে গিয়েছে। জলমগ্ন এলাকা গোটা এলাকা। বিমবিক রোডগামী রাস্তায় ভেঙে পড়েছে সেতু। রাস্তায় বইছে নদীর জল। অন্যদিকে বৃষ্টিতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদীতে। মঙ্গলবার রাতেই জলস্তর বিপদসীমার ঊর্ধ্বে উঠে এসেছে। ফলত বাধ্য হয়েছে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়তে হচ্ছে। বহু জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে হু হু করে জল ঢুকছে। পাশাপাশি জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। জলপাইগুড়ির সারদাপল্লি, সুকান্তনগর, মৌয়ামারি, চাঁপাডাঙা, নন্দনপুর, বোয়ালমারি, পাতকাটা ইত্যাদি গ্রাম ইতিমধ্যেই জলমগ্ন। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত।তবে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। পরিস্থিতি দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দুর্গত এলাকা থেকে স্থানীয় মানুষদের সরানোর কাজ চলছে। কিন্তু বৃষ্টি না থামলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।