জেলা

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের মঞ্চ থেকে মোদিকে তুলোধনা মমতার

জয়ের পরে এই প্রথম উত্তরবঙ্গে পা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ দিনের সফরে এদিন তিনি কলকাতা থেকে বিমানযোগে বাগডোগরা পৌঁছান। সেখান থেকে সোজা চলে যান শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই তিনি নাম করেই আক্রমণ সারলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ দেশের শাসক দল বিজেপিকে। রীতিমত তুলোধনা করলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী সহ গেরুয়া শিবিরকে। ত্রিপুরা ও উত্তরপ্রদেশের হিংসার পাশাপাশি ভ্যাক্সিন নিয়ে কেন্দ্র সরকারের ঢাক্কানিনাদ যে চূড়ান্ত ভুয়ো সেই তথ্যও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই জানান, পুজোর আগে ধারাবাহিক বৃষ্টির মধ্যে প্রায় দেড়শো পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে তাঁর ঠাণ্ডা লেগে যায়। তার জেরে পুজোর সময় তাঁর গলা কার্যত বসে গিয়েছিল। এখনও সেই ঠাণ্ডার রেশ তাঁর শরীরে রয়ে গিয়েছে। আছে হালকা কাশিও। তার মধ্যেও তিনি এসেছেন উত্তরবঙ্গ সফরে। সঙ্গে এটাও জানান, বিগত ২০ বছরে তাঁর কখনও জ্বর হয়নি। কাজ করেই তাঁর কেটে গিয়েছে। তাঁর শরীর এখন ‘জীবন্ত লাশ’ হয়ে গিয়েছে বলে তিনি নিজেই জানান। একাধিক অস্ত্রপচার, রাজনৈতিক আক্রমণ তাঁকে শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত করলেও মানসিক ভাবে ভেঙে ফেলতে পারেনি। স্বাধীনতার পরে তিনি ভিন্ন অন্য কারোর ওপরেও এত আক্রমণ হয়নি বলেই তিনি জানান। তবুও এত কিছুর মধ্যে তিনি কাজ করে চলেছেন, গান গাইছেন, ছবি আঁকছেন এবং অবশ্য সময়ে অসময়ে মানুষের জন্য রাস্তায় নেমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করছেন। এরপরেই মমতা আক্রমণ শানানো শুরু করেন মোদি সহ গেরুয়া শিবিরকে। মোদি ও বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিজেপি বাংলায় হিংসার কথা বলে। আমি বলি ত্রিপুরায় কী হচ্ছে তা নিজেরা আগে দেখ। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সন্তোষমোহনের মেয়েকেও মেরেছে। বাংলা ত্রিপুরা নয়। উত্তরপ্রদেশে তো কাউকে ঢুকতে দেওয়াও হচ্ছে না। ভ্যাক্সিন নিয়েও মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। বলছে ১০০ কোটি মানুষ ভ্যাক্সিন পেয়ে গেছে। আসলে ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ পেয়েছে মাত্র ২৯ কোটি মানুষ। বাচ্চারাও ভ্যাক্সিন পায়নি। তাঁদের ধরলে দেখা যাবে দেশের ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৭০-৭৫ কোটি মানুষ ভ্যাক্সিনই পায়নি। বাংলাতেও ভ্যাক্সিন পাঠানো হচ্ছে না সবসময়। আমাদের ভ্যাক্সিন কিনে সবাইকে দিতে হচ্ছে। অথচ সার্টিফিকেটে ছবি থাকছে নরেন্দ্র মোদির। কত মানুষ মারা গিয়েছেন কোভিডে! ডেথ সার্টিফিকেটেও তো মোদির ছবি থাকা উচিত। সে ছবি নেই কেন? কাউকে প্রতিবাদ করতে দেওয়া হচ্ছে না, সব চুপ।’ অন্যদিকে, এর আগেও দুর্গাপুজোকে ইস্যু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে গেরুয়া নেতাদের ৷ এমনকী, হিন্দু ধর্মের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নিষ্ঠা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে তাঁদের ৷ যার জবাবে মমতা এদিন বলেন, করোনা আবহেও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন সুন্দরভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপুজোর উৎসব পরিচালনা করেছে ৷ মমতার দাবি, এত শান্তি আর কোথাও নেই ৷ সব মিলিয়ে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানেও আগাগোড়া বিজেপিকেই নিশানা করে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ৷

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/617288939632116