কলকাতাঃ রাজ্য সরকার ১ সেপ্টেম্বর দিনটি পুলিশ দিবস হিসাবে ঘোষণা করে ছিলেন। কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক থাকায় এই পুলিশ দিবসটি পালন করা যায়নি। তাই আজ, ৮ সেপ্টেম্বর এই দিবসটি পালন হচ্ছে। নবান্নে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, করোনা মোকাবিলাতে পুলিশ অসামান্য ভূমিকা নিয়েছে মানুষকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি রক্ত এবং প্লাজমা ও দান করেছে পুলিশ । অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই, সন্মান জানানো হয় করোনা যোদ্ধাদের।করোনা সংক্রমনে পুলিশ সহ যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের প্রাণ গেছে,তাদের পরিবারের একজন সদস্যের হাতে চাকরির অঙ্গীকারপত্র তুলে দেওয়া হয় আজ।কলকাতা পুলিশের ৭-জন,পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ৮-জন,স্বাস্থ্য দপ্তরের ৪-জন ও একজন ডব্লুবিসিএস অফিসারের পরিবারের সদস্যকে আজ চাকরি দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান “আমাদের রাজ্যের পুলিশ অসাধারণ কাজ করছে।করোনার সময়ে জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সমস্তই পুলিশকে করতে হচ্ছে।তাই আমরা তাদের স্যালুট জানাই।পুলিশের কর্মীদের অনেকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে নিন্দা করেন।কিন্তু কি ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করছে,আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করছে তা দেখতে পান না।” নবান্নের সভাঘরে পুলিশ দিবস পালনের সময়ে এই ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের পুলিশকর্মী, সিভিক ভলেন্টিয়ার, হোমগার্ড, গ্রামীণ পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ার, আশাকর্মী এবং অক্সিলিয়ারি ফায়ার অপারেটরদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে ও পুজোর বোনাস দেওয়া হবে ২ হাজার টাকা করে। এই কর্মীরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সময়ে তিন লক্ষ টাকা করে অবসর ভাতাও পাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে হোমগার্ড এবং সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ারদের বেতন বৃদ্ধিও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন দৈনিক ৪৮০ টাকা করে বেতন পেতেন হোমগার্ডরা, এবার থেকে দৈনিক ৫৪৮ টাকা পাবেন। ফলে মাসে তাদের বেতন বাড়ল ২০৪০ টাকা। একই রকম বেতন বেড়েছে সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ারদেরও। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৪টি ব্লকের ৫৫০০ জুনিয়র কনস্টেবলের পদোন্নতির খবরও জানান। পাশাপাশি ঘোষণা করেন, জঙ্গলমহলের সব জুনিয়র কনস্টেবলকে জঙ্গলমহলের কনস্টেবল পদে উন্নীত করা হবে, কনস্টেবলরা যা যা সুবিধা পান এরপর থেকে এই জুনিয়র কনস্টেবলরাও সেই সেই সমস্ত বসুবিধা পাবেন। তিনি বলেন ‘পুলিশ যেভাবে কোভিড ওয়ারিয়রের কাজ করেছেন ও করছেন, রক্তদান করেছেন, প্লাজমা দান করেছেন তার জন্য তাঁদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমি ওঁদের কথা সারাক্ষণই মনে করি। ওঁদের পরিবার পাশে আছে বলেই ওঁরা এতটা ভাল কাজ করতে পারছেন। আমফান, করোনার সময় আপনারা যা করেছেন তাতে লক্ষ লক্ষ লোক বেঁচে গিয়েছেন। আপনাদের এই অবদান ভোলার নয়। কলকাতা পুলিশকে একসময় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সঙ্গে তুলনা করা হতো। আমাদের কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ এখন আবার খুব ভাল কাজ করছে। কোনও ভয়-ভীতির কাছে, কোনও চক্রান্তের কাছে মাথা নত না করে তারা কাজ করবে বলেই আমি মনে করি। কলকাতা সারা দেশের মধ্যে সেফেস্ট শহর।’ একই সাথে আজ একাধিক পুলিশি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সব শেষে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সমস্ত পুলিশ কর্মীদের সন্মান জানান মমতা বন্দ্যোপধ্যায়।