ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও ভারতীয় টিকাকে অনুমোদন দেয়নি ব্রিটেন। এমনকী সম্পূর্ণ টিকাকরণের পরও ভারতীয়দের ব্রিটেনে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট নয়াদিল্লি এবার প্রতিশোধের পথে হাঁটল। সূত্রের খবর, এবার ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বিধিনিষেধ জারি করল ভারত। কোভিড টেস্ট নেগেটিভ রিপোর্ট এবং বাধ্যতামূলক ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশিকা জারি ভারতের। প্রসঙ্গত, ভারত থেকে ব্রিটেনে গেলে যেমন ১০ দিনের অন্দরবাসে থাকা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে বরিস সরকার, তেমনিই এবার ব্রিটেনের নাগরিকদের জন্যও একই নিয়ম বলবত্ হতে চলেছে এ দেশেও। ব্রিটেন সরকারের পর্যটন নীতির পাল্টা নিয়ম চালু করছে ভারত সরকারও। এবার ব্রিটেনের নাগরিকরা ভারতে ঢুকলেও তাদের দশ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে। ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও। ব্রিটেনের নয়া পর্যটন নীতি নিয়ে টানাপড়েন চলছেই। ভারতের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনকে স্বীকৃতি দিলেও ভ্যাকসিনের শংসাপত্র নিয়ে নাকি ব্রিটেন সরকারের সন্দেহ কিছুতেই যাচ্ছে না। কাজেই এ দেশ থেকে ব্রিটেনে গেলে সেখানে ১০ দিনের অন্দরবাসে থাকা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে বরিস সরকার। দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনার পরেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই এবার পাল্টা নিয়ম জারি করতে চলেছে এ দেশের সরকারও। ব্রিটেনের নাগরিকদের জন্য কী নিয়ম? সরকারের তরফে বলা হয়েছে, আগামী সোমবার অর্থাত্ ৪ অক্টোবর থেকে ব্রিটেনের কোনও নাগরিক ভারতে এলে তাঁদেরও কড়া নিয়ম মানতে হবে। প্রথমত, বিমানবন্দরে নামার ৭২ ঘণ্টা আগের আরটি-পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট দেখাতে হবে, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের শংসাপত্র দেখা হবে এবং এর পরেও দশ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ব্রিটেনের নয়া পর্যটন নীতি বৈষম্যমূলক। বহু ভারতীয় কর্মসূত্রে, পড়াশোনার জন্য বা অন্য কারণে ব্রিটেনে যান। এই নীতি দুই দেশের পর্যটনেও প্রভাব ফেলছে। ব্রিটেন সরকার যদি তাদের নীতি বলবত্ রাখে, তাহলে পাল্টা নিয়ম জারি থাকবে ভারতেও। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে এতদিন টালবাহানা চলছিল। শেষে ব্রিটেন সরকার বলেছিল, এই ভ্যাকসিনে অনুমতি দিলেও ভারতীয়দের ব্রিটেনে এলে অন্দরবাসে থাকতেই হবে। ব্রিটেন সরকারের এই নীতি নিয়েই আপত্তি উঠেছিল। ব্রিটেনের সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে, অ্যাস্ট্রজেনেকার কোভিশিল্ড, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাক্সজেভরিয়া এবং মোডার্নার টিকা স্বীকৃতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু দু’টি এই টিকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তি ব্রিটেনে গেলে তাঁকে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। অনুমোদন সত্ত্বেও এই টিকা নিয়ে সে দেশে গেলে কেন ভারতীয়দের অন্দরবাসে থাকতে হবে সেই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ অধিকাংশ ভারতীয়ই এই টিকার ডোজ পেয়েছেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোভিশিল্ড টিকাই বেশি দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, টিকা নিয়ে আপত্তি নেই, সংশয় রয়েছে ভারত থেকে দেওয়া টিকার শংসাপত্র নিয়ে।