গভীর রাতে কলকাতায় পা রাখলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর রাত ১১টা নাগাদ কলকাতায় পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিল্লির প্রচন্ড ঠান্ডায় বিগড়ে যায় শাহ’র বিশেষ বিমানের ইঞ্জিন। তার রওয়ানা দিতেও দেরী হয়ে যায়। শেষে রাত ১টা ৪০মিনিট নাগাদ তাঁর বিমান কলকাতার মাটি স্পর্শ করতে সক্ষম হয়। মধ্যরাতে শহরে পা রেখে নিজেই ট্যুইট করেছিলেন বাংলায়। লিখেছিলেন, ‘কলকাতায় পৌঁছালাম। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মত মহামানবের এই পুণ্য ভূমিকে আমি শতকোটি প্রণাম জানাই।’ এখনও পর্যন্ত শনি সকালে শাহের যে কর্মসূচি থাকছে তাতে কতটা পরিবর্তন ঘটবে নাকি ঘটবে না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সফরের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে কলকাতা থেকেই। জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে অমিত শাহ যাবেন উত্তর কলকাতায় বিবেকানন্দ রোডে স্বামী বিবেকানন্দর বাড়িতে। সেখানে স্বামীজির মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন তিনি। স্বামী বিবেকানন্দর বাসভবনের পরিচালনা সংগঠনের সম্পাদক স্বামী জ্ঞানলোকানন্দ জানিয়েছেন, শনিবার সকালে মিনিট ১৫-র মতো সেখানে থাকবেন অমিত শাহ। করোনা আবহে তাঁর সঙ্গে সর্বাধিক ১০ জন সেখানে ঢুকতে পারবেন। দর্শন ও প্রণাম শেষে অমিত শাহের হাতে তুলে দেওয়া হবে চা, শুকনো প্রসাদ ও বই। একইসঙ্গে তাঁকে বিশেষ প্রসাদী শাল দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে বেড়িয়ে বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে অমিত শাহ পৌঁছবেন মেদিনীপুরে। শোনা যাচ্ছে শাহের সঙ্গে এই সফরের সঙ্গী হতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরে পৌঁছে সড়কপথে হবিবপুরে গিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে পুজো দেবেন তিনি। এর পরেই যাবেন মন্দির সংলগ্ন ক্ষুদিরামের মাসির বাড়িতে। সেখানে তিনি ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করবেন। বসু পরিবারের চারজন উত্তরাধিকারীকে বিজেপির তরফে অমিতের হাত দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার কথাও রয়েছে। তার জন্য মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। সেখানে দু-চার কথা বললেও বলতে পারেন অমিত শাহ। এর পর ১২টা ৪৫ নাগাদ তিনি যাবেন দেবী মহামায়া মন্দিরে। দেবেন পুজো। সেখান থেকে শাহ যাবেন কর্ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা ঝুনু ওরফে সনাতন সিংয়ের বাড়িতে। সেখানেই তিনি সারবেন মধ্যাহ্নভোজন। শাহকে খেতে দেওয়া হবে ভাত, রুটি, উচ্ছে ভাজা, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, খসলা শাকের ভাজা, লাউ মুগডাল, শুক্তো, চাটনি ও পাঁপড়। থাকছে স্যালাড এবং টক দই। মধ্যাহ্নভোজের প্রস্তুতিতে এখন থেকেই ব্যস্ত কৃষক সনাতন সিংয়ের পরিজনেরা। বিজেপির তরফে তা দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়। একপ্রকার বলতে গেলে তিনদিন ধরে তিনি পড়ে রয়েছেন ঝুনুর বাড়িতে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা ঝুনুর বাড়ি ঘুরে গিয়েছেন। দিয়ে গিয়েছেন একাধিক পরামর্শও। ভিড় সামলাতে তাঁর বাড়ির সামনে বাঁশের ব্যারিকেডের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বাড়ির সামনের দালানে চেয়ারের পাশাপাশি রাখা হচ্ছে দড়ির খাটিয়া। সেখানেও বসার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। খাওয়াদাওয়া সেরে দুপুর ২টো নাগাদ মেদিনীপুর কলেজ মাঠের জনসভায় হাজির হবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এই সভাতেই অমিতের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক।