বিনোদন

মিলল না জামিন, আরিয়ান ও তাঁর দুই বন্ধুকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এনসিবি-র হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত

মাদক কাণ্ডে সোমবার ফের আদালতে পেশ করা হয় শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান সহ তাঁর দুই বন্ধুকে। এদিন ছেলের শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন গৌরী খান । মাত্র ২ মিনিট কথা হয়েছে শাহরুখের সঙ্গে আরিয়ানের। গ্রেফতার হওয়ার পরই বাবার সঙ্গে কথা। বর্তমানে শাহরুখের পাশে দাঁড়িয়েছে বিটাউন। রবিবার একদিনের জন্য আরিয়ানকে এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এনসিবির হেফাজতে একদিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ আরিয়ান খান, তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচাকে মুম্বইয়ের আদালতে পেশ করা হয় ৷ মেডিক্যাল চেক-আপের পর জেজে হাসপাতালে তাঁদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষাও করা হয়েছে ৷ আদালতে তদন্তকারী সংস্থা এ দিন বলেছে, “মাদক সেবনকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত না-করলে আমরা কীভাবে জানতে পারব যে, কারা এই মাদক সরবরাহ করছে আর কারা এর খরচ দিচ্ছে ? এঁদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন ৷ তরুণ প্রজন্মের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে মাদক ৷” অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অভিযোগ করেন যে, আরিয়ান খানের মোবাইল থেকে বিস্ময়কর ও আপত্তিকর বেশ কিছু জিনিস পাওয়া গিয়েছে, সেই জন্যই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন ৷ যদিও আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে আদালতে বলেন, “শুধুমাত্র হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের উপর ভরসা করে এনসিবি দীর্ঘদিন তাঁর মক্কেলকে হেফাজতে চাইতে পারে না ৷ আরিয়ানকে ওই পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷” মানশিণ্ডের কথায়, “আরিয়ানের কাছে কোনও বোর্ডিং পাস ছিল না ৷ সেখানে তাঁর কোনও কেবিন বা আসনও ছিল না ৷ আর তাঁর কাছ থেকে কোনও কিছুই উদ্ধার হয়নি ৷ তাঁকে শুধুমাত্র চ্যাটের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷” এদিন এনসিবি-র তরফ থেকে জানানো হয় যে তদন্তের জন্যই আরিয়ান সহ তিনজনকে হেফাজতে রাখা জরুরি। আরিয়ান খানের ফোন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে

জোড়ালো প্রামাণ্য নথিও পাওয়া গেছে বলে আদালতে জানায় এনসিবি। আরিয়ানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করে এনসিবি। পাশাপাশি এদিন আরিয়ানের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে। তবে দু পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর সেই আবেদন নস্যাৎ করে আগামী ৭ অক্টোবর অবধি আরিয়ানকে এনসিবি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত।  উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে এক প্রমোদতরীতে মাদক পার্টি থেকে শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান সহ আটজনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্তারা। আরিয়ানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য সেবন ও মাদক কেনা বেচার গুরুতর অভিযোগ এনেছে এনবিসি।  দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বাজেয়াপ্ত করা হয় আরিয়ানের ফোন। খতিয়ে দেখা হয়, শেষ কয়েকদিন কার কার সঙ্গে ফোনে ও হোয়াটস অ্যাপে কথা বলেছেন আরিয়ান। এরপরই আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচা, নুপূর সারিকা, ইশমিত সিং, মোহক জয়সওয়াল, বিক্রান্ত চোকার, গোমিত চোপড়াকে গ্রেফতার করে এনবিসি। হাই-প্রোফাইল মাদক হানার এই ঘটনায় ১৩ গ্রাম কোকেন, ২১ গ্রাম চরস, ২২টি এমডিএমএ ওষুধ ও ৫ গ্রাম এমডি উদ্ধার করা হয়েছে ৷ অভিযুক্তরা তাঁদের জামাকাপড়ে, অন্তর্বাসে ও ছোট ব্যাগে মাদক লুকিয়ে রেখেছিল বলে জানা গিয়েছে একটি সূত্রের দাবি ৷ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মুম্বই ছাড়ার পর প্রমোদতরীতে সেই পার্টি শুরু হয়েছিল ৷নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস (এনডিপিএস) ১৯৮৫ আইনের ৮সি, ২৭, ২২ নম্বর ধারা, এছাড়া এমডিএমএ ও এক্সট্যাসি আইনের  অন্তর্গত ১৪(১), ১৪ (বি), ২০(বি) ধারায় মামলা করা হয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে।  রবিবার আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে জানান যে এই পার্টিতে যাওয়ার টিকিটও ছিল না আরিয়ানের কাছে, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এমনকি আরিয়ানের কাছে কোনও মাদকদ্রব্য ছিল না। তাই তাঁকে গ্রেফতার করাই ভুল, বলে দাবি করেন আরিয়ানের আইনজীবী।