কলকাতা

‘প্রথম একাদশে থাকতে চাই, খেলার সুযোগ না পেয়ে বিজেপি ছেড়েছি’, মন্তব্য বাবুল সুপ্রিয়-র

কলকাতা: বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কেন দলবদল?  কারওর উপর অভিমান থেকেই কি বিজেপি ছাড়লেন রাজ্যসভার সাংসদ? নাকি মমতার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব? কী দিল তৃণমূল? বাংলার রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ঘুরপাক খাচ্ছে এ সব প্রশ্নই। আর  সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতেই রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। রবিবার সাংবাদিক করে তিনি বলেন, ‘আমি যদি ফুটবল খেলতাম মোহনবাগানের প্রথম একাদশে যদি সুযোগ না পেতাম, তবে অন্য কোনও ছোট টিম অথবা ইস্টবেঙ্গলে চলে যেতাম। আমি প্রথম একাদশে থাকতে চাই, খেলার সুযোগ না পেয়েই বিজেপি ছেড়েছি। আমায় প্রথম একাদশে রাখায় মমতা অভিষেককে ধন্যবাদ জানাই। বাংলার মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, আমাকে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে আমি সেই সুযোগ ব্যবহার করছি। তৃণমূলের প্রস্তাব সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। তৃণমূলে যোগদানে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন।’ এরই পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘ট্রোলিং হবে জেনেও আমি দলবদল করেছি। বিজেপি নেতারা এখন আমায় নিয়ে সমালোচনা করবে স্বাভাবিক। শুভেন্দু, তথাগতবাবুরা তাই করেছেন।‌ কিন্তু তথাগতবাবু যদি আমার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে কটাক্ষ করেন তাহলেও হত। উনি নিজের দল নিয়ে ভাবুন। সাংসদ পদ ছাড়া নিয়ে বাবুল এদিন বলেন, ‘স্পিকার চাইলে বুধবারই ইস্তফা দেব।’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন,  ‘সাত বছর ধরে তৃণমূল স্তরে কাজ করেছি বাংলার জন্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্যও কাজ করেছি। আমার কী দায়িত্ব হবে সেটা মমতাই ঠিক করবেন। আগামী দিনে মানুষ যাঁকে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চান সেই নামের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন।’

একনজরে দেখে নেওয়া যাক বাবুল সুপ্রিয়-র বক্তব্য –

🔴 ‘জাতীয় রাজনীতিতে বাড়ছে মমতার গুরুত্ব’-মমতা দেশের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী হয়ে উঠছেন। গণতন্ত্রে বিরোধীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুখ। এটা বিজেপিও মানে। তাই তাদের একাধিক বিরোধী নেতা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

🔴 প্রসঙ্গ ঝালমুড়ি- মমতা দিদির সঙ্গে ঝালমুড়ি খেয়েছিলাম কারণ উনি সাংবিধানিক প্রধান। আমি তখন নতুন মন্ত্রী হয়েছি। উনিও রাজভবন আসছিলেন, আমাকে বললেন ছেড়ে দেবেন, তাই গাড়িতে উঠলাম। ভিক্টোরিয়ার সামনে ঝালমুড়ি খাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সে ওঁর বদলে অন্য কেউ বললেও খেতাম। এখন বাংলার প্রয়োজনে বিজেপি নেতার সঙ্গে ধোকলা খেতে হলেও খাব। 

🔴 প্রসঙ্গ দিলীপ ঘোষ:  দিলীপবাবুকে বর্ণপরিচয় উপহার দেব। ওঁর বাংলা ভাষা শেখার দরকার আছে। ওঁকে বলব, বাংলা ভাষাকে কলঙ্কিত করবেন না। অনুপম হাজরার প্রশ্নের জবাব দেব না। 

🔴 প্রসঙ্গ কবীর সুমন: ”এটা ওঁর ব্যক্তিগত মত, যা ইচ্ছে হয়েছে, তাই বলেছেন। আমার ফোনে ফেসবুক, টুইটার নেই। আমি কিছু বলব না এসব নিয়ে।”

🔴 প্রসঙ্গ রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ: তৃণমূল কী দেবে সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। অর্পিতা ঘোষের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার সঙ্গে আমার তৃণমূলে যোগের সম্পর্ক কেউ পেলে ভালই। আমি কিছু বলব না।

🔴 পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে? ২০২৪ সালে সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ যে তিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন। সেই তালিকায় অন্যতম সেরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ আছে কি? আমি এখন যে দলে আছি, তার পুরোধাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইব সেটাই স্বাভাবিক। ২০১৪ সালে নতুন আশা জাগিয়েছিলেন মোদিজি। এখন তাঁর জনপ্রিয়তা কমেছে কিনা সাংবাদিকরা দেখুন।

🔴 প্রসঙ্গ নিচুতলার কর্মীরা: অভিষেক, ডেরেকের জন্য তৃণমূলে উপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলাম। তৃণমূলস্তরের কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।

🔴 প্রসঙ্গ ভবানীপুরে প্রচার: ও ( প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল) আমার বেশ কিছু মামলা লড়েছিল দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। খুব ব্রাইট। সেই জন্যই বিজেপিতে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিলাম। চেয়েছিলাম গেরুয়া শিবিরে যোগ দিক। যোগ দেওয়ায় খুশিও হয়েছিলাম। তাই দলকে অনুরোধ করব আমায় বিড়ম্বনায় না ফেলতে। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য মনে হয় না আমার প্রচারের প্রয়োজন আছে।