কলকাতা

বামেদের ডাকা ধর্মঘটে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক, দোকান বাজার সবই খোলা

বাম ট্রেড ইউনিয়ন গুলি দেশজুড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছে। আজ ২৮ শে মার্চ এবং আগামীকাল ২৯ শে মার্চ এই দুই দিনব্যাপী সর্বভারতীয় সাধারন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। মোট ৪৮ ঘন্টা ধর্মঘটের আজ প্রথম দিন। আর সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়েছে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি। এদিন সকাল থেকেই অবশ্য রাজ্য জুড়ে অবরোধ, মিছিল করার চেষ্টা করেন বামপন্থীরা। কিন্তু কথাও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। বনধকে ব্যর্থ করে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে সরকারিভাবে কোন কিছুই বন্ধ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যার ফলে ট্রেন বাস চলাচল হচ্ছে, মানুষ নিজেদের কাজে বেরোচ্ছে, এক কথায় তারা বনধকে সমর্থন করছেন না। যার ফলে সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি এবং উত্তেজনা চোখে পড়েছে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাসে ভাঙচুর চালাল বনধ সমর্থনকারীরা। কোচবিহার-দিনহাটা রুটের বাসে বনধ সমর্থনকারীদের ঢিলে ভেঙে যায় বাসের জানলার কাচ। শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ডায়মন্ডহারবার লাইনের হোটর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করেন বনধ সমর্থনকারীরা। যার জেরে কিছুক্ষণ ট্রেন বন্ধ থাকে। সকালে দমদম মেট্রো স্টেশনের ভেতরে বিক্ষোভ দেখা যায় বাম কর্মী সমর্থকদের। মেট্রো থেকে দমদম রেলওয়ে স্টেশনে সর্মথকরা পৌঁছতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তারা। অবশেষে বড় কোনো অশান্তি এড়াতে সেখানে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। সকাল সকাল লেকটাউন যশোর রোডে বনধের প্রথম দিনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাম কর্মী সমর্থকরা। তবে সেখানে লেকটাউন থানার বিশাল পুলিশবাহিনী এসে বনধ তুলে দেয়। যাদবপুরে এই বনধ কে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায়। সকাল থেকেই যাদবপুরের ৮ বি বাসস্ট্যান্ডে প্রথমে বিক্ষোভ দেখান বামেরা। তারপরে যাদবপুর রেল স্টেশনের জমায়েত করে রেললাইনে বসে পড়েন তারা। ব্যানার হাতে দীর্ঘক্ষন রেললাইন অবরোধ করে রাখেন। যার ফলে ব্যাহত হওয়ার রেল পরিষেবা। এদিকে বেলঘড়িয়ার পূর্বপাড়া

এমবি রোডে বামেদের অবরোধ তুলতে গিয়ে রীতিমতো পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাদের। এদিন গারুলিয়া সি আই টি ইউ এর নেতৃত্বে শ্যামনগর স্টেশন সংলগ্ন ২৩ নম্বর রেলগেট অবরোধ করার চেষ্টা করেন ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীরা । তবে প্রায় আধঘন্টা ধরে অবরোধ চলার পর জগদ্দল থানার পুলিশ এবং রেল পুলিশের তৎপরতায় অবরোধ তুলে দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। হাওড়া দাসনগর সানপুর মোড়ের কাছেও পুলিশের সঙ্গে বনধ সমর্থক কারীদের ব্যাপক ধস্তাধস্তি চোখে পড়ে। তেমনি পুলিশও চেষ্টা করেছে যাতে কোনরকম অশান্তি সৃষ্টি না হয় এবং জনসাধারণের দৈনন্দিন কার্যকলাপে ব্যাঘাত না ঘটে । সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু জেলা রয়েছে যেখানে এখনও পর্যন্ত বনধের প্রভাব তেমন ভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। যেমন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সমস্ত মিল খোলা রয়েছে সকাল থেকেই। তবে শ্রমিকদের উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে কম। এছাড়াও রাস্তায় যান চলাচল সবকিছুই স্বাভাবিক রয়েছে। দোকান বাজার সবই খোলা রয়েছে । দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর, কাকদ্বীপ-সহ আশপাশের এলাকায় বামপন্থীদের ডাকা এই বনধের কোনো রকম প্রভাব এখনও পর্যন্ত পড়েনি সেখানে। সকাল থেকেই সরকারি-বেসরকারি বাস এবং অন্যান্য যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে রাস্তায়। খুলেছে দোকান বাজার। সকাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাস ও গঙ্গাসাগরের কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাট থেকে লট নম্বর ৮ এ যাওয়ার ভেসেল পরিষেবা সচল রয়েছে। দোকান বাজারও খুলেছে। ধর্মঘটে যাতে কোনও রকম ঝামেলা না হয় তার জন্য সতর্ক রয়েছে পুলিশ। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছি ব্রিজের সামনে রাস্তা অবরোধ করলেন বন্ধ সমর্থকরা। এমনকী, রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন বনধ সমর্থনকারীরা। এরপর রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়। কলকাতার রাস্তায় কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না হয় তার জন্য মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। কলকাতাতেও জনজীবন স্বাভাবিক ।