বাংলাকে বিনামূল্যে কোভিড টিকা দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দু’বার চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার গোটা দেশে বিনামূল্যে টিকার বন্টন দাবি করে সোজা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে কোভিড টিকার বিতরণই শুধু নয়, টিকাকরণের ক্ষেত্রেও অভিন্ন নীতি নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ভ্যাকসিন দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করল রাজ্য সরকার৷ রাজ্য সরকারের তরফে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে আর ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে না রাজ্য সরকার। উৎপাদক সংস্থার থেকে সরাসরি টিকা কিনে নিতে হবে তাদের। সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে ৩ কোটি ভ্যাকসিনের বরাত দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তার মধ্যে ১ কোটি ডোজ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে দেওয়ার কথা ছিল। বেসরকারি হাসপাতালকে ভ্যাকসিন দেওয়া না হলে ওই টিকা কি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ ক’দিন আগেও রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছিল, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ৩০ এপ্রিলের পর ভ্যাকসিনের সব পুরনো স্টক সরকারকে ফেরত দিতে হবে। ১ মে থেকে করোনার টিকাকরণ চালাতে হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ভ্যাকসিন কিনে নিতে হবে উৎপাদনকারী সংস্থার কাছ থেকে। কিন্তু পরে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও ভ্যাকসিন দেবে বলে তারা জানায়৷ আর সেইমতো কেন্দ্রকে বরাত দিয়েছিল রাজ্য৷ এরই মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে ভ্যাকসিনের ৯৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ডোজ মজুত রয়েছে। তারা বলেছে, এ পর্যন্ত ১৭ কোটিরও বেশি ভ্যাকসিন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আগামী তিনদিনের মধ্যে কোভিড ভ্যাকসিনের আরও ৩৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩০টি ডোজ তাদের দেওয়া হবে। এদিকে, দেশবাসীকে বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার, সরাসরি তা মোদি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবারের মধ্যে কেন্দ্রকে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। অপরদিকে, রাজ্য সরকার করোনা টিকার বিনামূল্যে বণ্টন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। দেশজুড়ে টিকাকরণের জন্য অভিন্ন নীতি নেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার পিটিশনে জানিয়েছে, কেন্দ্রকে অবিলম্বে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য এবং রাজ্যগুলিতে তা বিনামূল্যে বিতরণ নিশ্চিত করার স্বার্থে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। দামের ক্ষেত্রে যে বৈষম্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে সেই নীতিও পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।