কলকাতা

প্রাক্তন ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পরিচারকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগে গ্রেফতার গাড়ির চালক

প্রাক্তন ফুটবলার প্রয়াত পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি থেকে পরিচারকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ এই ঘটনায় খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ির গাড়ি চালককে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে বিধাননগরের সল্টলেকের জিডি ব্লকে ৷ ধৃতের নাম বরুণ ঘোষ (৫৮) ৷ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা তিনি ৷ তাঁকে গ্রেফতার করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ ৷ খুন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ৷ পুলিশি হেফাজতের দাবি জানিয়ে ধৃত গাড়ির চালককে বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম গোপীনাথ মাহুরি (৪৮) ৷ পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার বাসিন্দা ছিলেন তিনি ৷ প্রয়াত প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে কাজ করতেন গোপীনাথ ৷ ওই বাড়িতে শুক্রবার রাতে পরিচারকরা মদের আসর বসান । সেখানেই বাড়ির গাড়ি চালক বরুণের সঙ্গে পরিচারক গোপীনাথের বচসা বাঁধে । তাঁকে কেন্দ্র করে পরিচারককে খুন করেন বরুণ ঘোষ বলে পুলিশের অনুমান ৷ ওই বাড়ির রান্না ঘরের ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয় মৃত ব্যক্তিকে । কী কারণে এই খুন, খতিয়ে দেখছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ । জানা গিয়েছে, দোলের দিন বাড়িতে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলারের দুই মেয়ে ৷ ছোট মেয়ে পূর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় অবিবাহিত ৷ তাই তিনি বাবার বাড়িতেই থাকেন এবং দোল উপলক্ষে বড় মেয়ে পৌলা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকের ওই বাড়িতে দু’দিনের ছুটিতে ঘুরতে আসেন ৷ তিনি আদতে থাকেন থাইল্যান্ডে ৷ বাপের বাড়ি এসে পৌলার ব্যাগ থেকে গতকাল ৫০০০ টাকা খোয়া যায় বলে তিনি দাবি করেন ৷ তিনি বাড়িতে থাকা ৫ জন কেয়ারটেকার ও গাড়ি চালককে ডেকে সেই টাকার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করেন ৷ কিন্তু টাকা নেওয়ার কথা কেউ মানতে চাননি বলে জানা গিয়েছে ৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, পরে রাতে ওই বাড়িতে মদের আসর বসান গোপীনাথ মাহুরি ও বরুণ ঘোষ ৷ সেই আসরে প্রথমে ঠাট্টা, তারপর ঝগড়া এবং হাতাহাতি হয় দু’জনের মধ্যে । এরপরেই গোপীনাথ ছুটে গিয়ে রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে এসে বরুণের গলায় আঘাত করেন ৷ তাঁর হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে বরুণ পালটা গোপীনাথকে আক্রমণ করেন ৷ তাতে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন গোপীনাথ ৷ তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে ৷ সেখানে চিকিৎসকরা গোপীনাথকে মৃত ঘোষণা করেন ৷ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় মেয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানার অভিয়োগ করেন ৷ পাশাপাশি হাসপাতাল থেকেও থানায় খবর দেওয়া হয় ৷ পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায় ৷ কী নিয়ে গোপীনাথ ও বরুণের মধ্যে বচসা হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ । শুক্রবার রাতে গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় । শনিবার সকালেও ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ আধিকারিকেরা । ঘটনার সময় পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন ৷ তাঁরা গোলমালের শব্দ পেয়েছিলেন কি না, তা জানার জন্য তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । বাড়ির বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।