কলকাতা

ফের ধাক্কা খেল বিশ্বভারতী, ৩ পড়ুয়ার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট

 হাইকোর্টে জোর ধাক্কা বিশ্বভারতীর। বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিশ্বভারতীর করা এক রিট পিটিশনের রায় দিতে গিয়ে এই নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। সেই সঙ্গে উপাচার্যকে সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট। ছাত্র আন্দোলনের জেরে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সোমনাথ সৌ, ফাল্গুনী পান এবং সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশন বর্ধিত করা হয়। তারা সাসপেন্ড থাকাকালীন তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যথেচ্ছাচার’ করছেন। এই অভিযোগে উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতার কাছে আন্দোলন মঞ্চ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর তরফ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। সেই মামলার চূড়ান্ত রায় জানান বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত খারিজের নির্দেশ দেন তিনি।সেই সঙ্গে বিচারপতি বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে আরও বেশি সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্যান্য পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে উপাচার্যের নিরাপত্তাও কমানো হয়েছে। এতদিন তাঁর নিরাপত্তায় ছিলেন অতিরিক্ত পাঁচ পুলিশকর্মী। সেই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হল। এখন থেকে উপাচার্যের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন একজন পুলিশকর্মী। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের টালবাহানায় তিন ছাত্রছাত্রী এখনও অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারেননি। তাঁদের এখনও সেই লিংক পাঠানো হয়নি। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে এ নিয়ে শুনানির সময় ছাত্র–ছাত্রীদের তরফে নালিশও করা হয়। বিচারপতি কড়া মনোভাব ব্যক্ত করে বলেছেন, বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়াকে পঠন-পাঠনে যোগদান করতে দিতে হবে। পড়ুয়াদের আইনজীবী শামিম আহমেদ জানান, ‘‌মহামান্য আদালত আজ তিন পড়ুয়ারই বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে তাদের ক্লাসে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোন বাধা রইল না। তবে এদিন বিশ্বভারতী লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, এখন তাদের ক্লাস হচ্ছে না, তাদের ক্লাস শুরু হলেই পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়ার লিঙ্ক পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ফলে তাদের পঠন-পাঠনের আর কোনও অসুবিধা থাকছে না।”  এদিন ছাত্র আন্দোলনে বহিরাগতদের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত।