এমনটা যে হতে পারে সেটা অনুমান করা হয়েছিল অনেক আগেই। আর সেটা ঘোষণা করলেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন এবার বাংলার বুকে চালু হতে চলেছে রাজ্য সরকারের নিজস্ব ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ‘খেলা হবে’। একুশের ভোটে এই ‘খেলা হবে’ শ্লোগানকে হাতিয়ার বানিয়ে বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল তৃণমূল। এবার সেই শ্লোগানকেই বেছে নেওয়া হল রাজ্য সরকারের নিজস্ব ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের নামকরণের জন্য। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই নাম শুধু যে বিজেপির কাছে তাই নয়, রাজ্যের সব তৃণমূল বিরোধীদের কাছেই বড়সড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কেন্দ্র সরকার প্রায় ২ বছর ধরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। এই টাকা ছাড়তে বাংলার আধিকারিকেরা যেমন বহুবার কেন্দ্র সরকারকে অনুরোধ করেছেন, চিঠি দিয়েছেন, তেমনি খোদ মুখ্যমন্ত্রী এই টাকা ছাড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও বাংলার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ড হোল্ডারদের টাকা ছাড়েনি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েই রাজনৈতিক ভাবেই বিজেপি ও মোদি সরকারকে আক্রমণ করে এসেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার মাটিতে বিজেপির মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ হিসাবে উঠে এসেছে সেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা না দেওয়ার ঘটনাই। এদিন সেই প্রেক্ষাপটে একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের কাজ বছরে ৪০ দিন হয়। কিন্তু এখানে সেই কাজ অনেকদিন বেশি হয়েছে। কেন্দ্র টাকা দেবে না বলে তো আর বাংলার মানুষেরা কাজ পবে না এমন তো নয়। বাংলা এবার নিজের ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করবে। তার টাকাও জোগাড় করা হয়েছে। বাংলায় কর্ম সৃষ্টির নতুন প্রকল্পের নাম হবে খেলা হবে।’ এদিন একুশের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘এবার বাংলার সরকারের টাকাতেই যাতে ১০০ দিনের কাজ হয়, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত কেন্দ্র টাকা না দেবে, ততদিন পর্যন্ত জব কার্ড হোল্ডারদের সেই কাজ দেওয়া হবে। চারদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এখান থেকে বসে বলবে, বাংলাকে ভাতে মারো। বাংলাকে ভাতে মারা যাবে না, বাংলা অনেক শক্তিশালী। বাংলায় এত প্রকল্প। প্রায় ৬৭টি মতো। আর কোনও রাজ্য়ে নেই। বিশ্বে নেই। সামাজিক সুরক্ষায় আমরা প্রথমে।’ ঠিক সেই কারণেই জ্বলছে বিজেপি। নীতি আয়োগ বলছে, গত এক বছরে ১১ শতাংশ দারিদ্র কমিয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আর দশ বছরের হিসেবে ২৬ শতাংশ। বাংলায় কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪০ শতাংশ, আর গোটা ভারতে ৪৫ শতাংশ কমেছে। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ পরপর পাঁচ বার আমরা প্রথম হয়েছি। ১০০ দিনের কাজ যা গরীব মানুষের জন্য তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেছেন ২ অক্টোবর দিল্লতে ধরনা করব, প্রাপ্য না দিলে। আমাদের টাকা না দিলে, গান্ধীজীর জন্মদিনে আমরা সবাই দিল্লি যাব। রাস্তায় আটকালে যেখানে আটকাবে, সেখান থেকে দিল্লি যাব। ১০০ মিটার দূরে ব্লকে ব্লকে বিজেপি নেতার বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। যাতে বলতে না পারে আমরা অবরুদ্ধ করে রেখেছি। জবাব তোমাকে দিতে হবে। আগে দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে আসো। বাংলাকে ভাতে মারা যাবে না।’