করোনার জেরে বহু দিন ধরে রাজ্যে বন্ধ আছে স্কুল, কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কবে খুলবে স্কুল তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছিল ছাত্র ও অভিভাবক মহলে। সোমবার তা নিরসন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা-য় আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন, কালীপুজো, ছটপুজো মিটলেই আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলে দেওয়া হবে স্কুল। এর জন্য প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীর ব্যবস্থা নিতে মুখ্যচসিবকে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় । মুখ্যসচিবকে এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্যও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক চলাকালীনই মুখ্যসচিবকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘৪ তারিখে কালীপুজো। ৬ তারিখে ভাইফোঁটা। ১০ আর ১১ তারিখ ছট পুজো। ১৩ তারিখে জগদ্ধাত্রী পুজো। তোমাকে যা করতে হবে ১৫ তারিখ থেকে করতে হবে। স্কুল কলেজ খোলার ব্যাপারেও ১৫ তারিখ থেকেই করে দাও। তার আগে স্কুল কলেজগুলি পরিষ্কার করতে হবে। সেগুলিও মাথায় রাখতে হবে।’ আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ ভবনগুলির প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।নিয়ন্ত্রণে থাকলেও করোনা সংক্রমণের এখনও সম্পূর্ণ অবসান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজগুলিতে নিয়মিত ক্লাস করানো হবে কি না? প্রতি ক্লাসে কতজন পড়ুয়া থাকবে? তা নিয়ে এ দিন কোনও কিছু জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। কোভিডবিধি মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ১৫ তারিখ বীরসা মুন্ডার জন্মদিন। ফলে একদিন পিছিয়ে ১৬ নভেম্বর স্কুল-কলেজ খোলার সম্ভাবনা। জানিয়েছেন, ওই দিন থেকেই স্কুলের নবম-দ্বাদশ ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আপাতত চালু থাকছে অনলাইন ক্লাসই। এই শ্রেণিগুলির অফলাইন ক্লাস কবে শুরু হবে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ রাজ্যে করোনা থাবা বসানোর পরই অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ বলে ঘোষণা করে রাজ্য। পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছিল নবান্ন। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় ২০ মাস। কিন্তু সংক্রমণের অবসান না ঘটায় ফের স্কুল, কলেজ খোলা সম্ভব হয়নি। অনলাইনে ক্লাস চলছিল। এতে বেশ কিছু বাস্তবিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। ফলে রাজ্যের কাছে ক্রমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার দাবি উঠতে থাকে।সেই পেরক্ষিতেই পুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে পুজোর পরই স্কুল, কলেজ খোলা হবে। শেষ পর্যন্ত, ছুটি শেষের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় স্কুল, কলেজ ফের খোলার দিন ঘোষণা করলেন। ফলে আবারও স্কুল, কলেজমুখী হতে দেখা যাবে পড়ুয়াদের। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের খতিয়ান দিতে গিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, স্টুডেন্টসে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে প্রশাসনিক বৈঠকে বলা হয় মোট ৪ কোটি আবেবন পড়চে। এনিয়ে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি কাজ শুরু হয়ে যাবে।