বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিনের পর এবার রাজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী কয়েকদিনে এ রাজ্যে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। সেসময় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করুক কেন্দ্র। এই আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা ‘অত্যন্ত জরুরি’ এক চিঠিতে মমতা লিখেছেন, গত ৫ এপ্রিলই আপানাকে জানিয়েছিলাম দিন দিন পশ্চিমবঙ্গে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েই চলেছে। গত দুদিন রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা ছিল দৈনিক ৪৭০ মেট্রিক টন। যে হারে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী ৭-৮ দিনে অক্সিজেনের চাহিদা গিয়ে দাঁড়াবে দৈনিক ৫৫০ মেট্রিক টন। এনিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য আধিকারিক ও অন্যান্য আধিকারিকদের চিঠি লিখেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। তাই যত দ্রুত সম্ভব বাংলায় দৈনিক ৫৫০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের ব্যবস্থা করুন।মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় এবার সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে অক্সিজেনে। কোভিড রোগীকে সুস্থ করে তোলার অন্যতম উপকরণ এটি। কিন্তু সম্প্রতি দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রান্তেই অক্সিজেনের অভাব প্রকট। বাংলায় সেই সমস্যা বিশেষ ছিল না। পর্যাপ্ত অক্সিজেন তৈরি হয় রাজ্যের প্লান্টগুলিতেই। বরং উদ্বৃত্ত অক্সিজেন এতদিন অন্যান্য রাজ্যে রপ্তানিও করেছে বাংলা। তবে এবার আর তা হওয়ার উপায় নেই। প্রতিদিন এখানেও বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে এ রাজ্যে যে পরিমাণ অক্সিজেন তৈরি হয়, তার চেয়ে বেশিই প্রয়োজন হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা। তিনি নিজেও আগামী ১৫ দিনের জন্য সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাঁর আশঙ্কা, এই সময়ে আরও বাড়বে করোনা সংক্রমণ। আর তাতেই চিকিত্সার জন্য মেডিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই অবস্থায় রাজ্যের প্লান্টগুলিতে এত পরিমাণ অক্সিজেন উত্পাদন সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেন চেয়েছে রাজ্য সরকার। এবং সেই বাড়তি অক্সিজেনটুকু থেকে যেন বাংলা বঞ্চিত না হয়, চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে সেই আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে একাধিকবার তিনি বিনামূল্যে রাজ্যবাসীকে করোনা টিকা দিতে চান, এ কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনতে চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন। আর তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলার কৃষকদের জন্য পিএম কিষাণ নিধির টাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার মোদিকে চিঠি লিখেছেন মমতা। আর এবার অক্সিজেনের জন্য লিখিত আবেদন পাঠালেন। এবার বাংলার দিকে কেন্দ্র কতটা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, সেটাই দেখার।