কয়লা পাচার কাণ্ডের মামলার তদন্তে দিল্লিতে বার বার তলব কেন? কলকাতার বাসিন্দা হওয়া সত্বেও ও এই তদন্তের কেন্দ্রস্থল বাংলা হলেও বারবার দিল্লিতে কেন তলব করছে ইডি। এই মর্মে আগাম রক্ষাকবচ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সেই আর্জিতে গুরুত্ব দেয়নি আদালত। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে অভিষেক ও রুজিরাকে আগাম রক্ষাকবচ দেয়নি দিল্লি হাইকোর্ট। ইডি’র তরফে কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিষেক ও রুজিরাকে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই দিল্লিতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সমনে স্থগিতাদেশের আর্জি জানালেও তাতে গুরুত্ব দেয়নি আদালত। এই মামলার আগামী শুনানি ২৭ সেপ্টেম্বর। সেপ্টেম্বরের গোড়াতেই কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করে ইডি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ইডির জামনগরের অফিসে সময়ের আগেই হাজিরা দেন। সেদিন তাঁকে দীর্ঘ নয় ঘণ্টা জেরা করা হয়। কিন্তু করোনার কথা মাথায় রেখেই রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ইডিকে আর্জি জানিয়ে একটি চিঠি দেয়। রুজিরা চিঠিতে জানায় এখন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তিনি দুই সন্তানের মা, তাই দিল্লিতে যাওয়া সম্ভব নয়। ইডির অফিসাররা কলকাতায় শান্তিনিকেতনের বাড়িতে এসে জেরা করতেই পারে। কিন্তু ইডি সেই চিঠিকে গুরুত্ব দেয়নি। ইতিমধ্যেই রুজিরার বিরুদ্ধে দিল্লির চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা করে ইডি। যার ভিত্তিতে আদালতের তরফে ৩০ সেপ্টেম্বরের আগেই রুজিরাকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে গত ৬ সেপ্টেম্বরের পর ফের মাত্র দু’দিনের নোটিশে দিল্লিতে তদন্তের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। যার পাল্টা অভিষেক জানান এত কম নোটিশের ভিত্তিতে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়। আর তাই ইডি’র এই দিল্লি তলবের বিরুদ্ধে আদালত যান অভিষেক ও রুজিরা। কিন্তু সেই মামলায় গুরুত্ব দেয়নি আদালত। অভিষেক ও রুজিরার পক্ষে এদিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবি কপিল সিব্বল। কলকাতার একটি কেস যার হাজিরার জন্য দিল্লিতে ডেকে পাঠানোতেই আপত্তি রয়েছে তাঁর মক্কেলের জানান, আইনজীবি। সিব্বল জানিয়েছেন, সমন পাঠানোর ক্ষেত্রে নিয়ম মানেনি ইডি। সাধারণত কোনও মহিলাকে জেরার জন্য তাঁর বাসস্থানের নিকটবর্তী থানাতেই তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে রুজিরাকে দিল্লিতে ইডি অফিসে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে সমন পাঠিয়েছে ইডি। এছাড়া এই মামলার অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ আইনব্যবস্থার আওতাভুক্ত। অভিষেক-রুজিরা দুজনেই কলকাতার বাসিন্দা সেক্ষেত্রে হাজিরার জন্য দিল্লি ডেকে পাঠানোর যৌক্তিকতা কী? যদিও ইডি ও মামলাকারী দুই পক্ষের জবাব শুনেই সমনের উপর স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করেছেন বিচারপতি যোগেশ খান্না। পাশাপাশি অভিষেক-রুজিরা এবং ইডি- অর্থাৎ দু’পক্ষকেই হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।