জেলা

কাঁথিতে শুভেন্দুর সভা থেকে ফেরার পথে বিক্ষোভ! অবরুদ্ধ কাঁথি

ভেবেছিলেন নিজ গড়ে দাঁড়িয়ে শাসকের দিকে একের পর এক তীর ছুঁড়বেন। একই সঙ্গে রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকার ও দলকে উত্‍খাত করার ডাক দেবেন। কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন শাসকের দিকে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে গেল ঠিক তার উল্টো। নিজ গড়েই এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার দুটি প্রধান কর্মসূচি ছিল শুভেন্দুর। এক দিলীপ ঘোষের সঙ্গে জঙ্গলমহলের সভা, যেখানে আশাতীত লোক হয়নি বলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে গেরুয়া ব্রিগেডকে এবং দুই কাঁথিতে রোড শো ও সভা। এই শেষের কর্মসূচিটিকে ঘিরেও ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি যা রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত চলে। কার্যত সংঘর্ষ, বিক্ষোভ, অবরোধে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কাঁথি শহর সহ মহকুমা এলাকা। আর সবটাই ঘটেছে জেলার যুব কংগ্রেস সভাপতি পদে রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা অধিকারী পরিবারের চিরবিরোধী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরিকে আনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই। রবিবারে কাঁথির ঢোলামারি বাজার থেকে মুকুন্দপুর পর্যন্ত রোড শো ছিল শুভেন্দু্র। রোড শো শেষে মুকুন্দপুরে তিনি একটি সভাও করেন। সেখান থেকে তৃণমূলকে তিনি আক্রমণও শানেন। সেই সভা শেষে বিজেপি কর্মী ও শুভেন্দুর অনুগামীরা তৃণমূলের বেশ কিছু কার্যালয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের পতাকা, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে দেন তাঁরা। ২-৩টি কার্যালয় ভাঙচুরও করেন তাঁরা।  অভিযোগ মানিকপুরে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। তার প্রতিবাদে বিজেপির কর্মীরা দিঘা-মেচেদা সড়কে অবরোধ শুরু করে। এমনকি কাঁথি, ভগবানপুরেও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। কাঁথির রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ইতিমধ্যে আবার এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে নালিশ ঠুকেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কীভাবে বিজেপি কর্মীদের উপর ‘হামলা’ চালানো হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানান তিনি। এরপরেই পাল্টা প্রতিরোধে নামে তৃণমূলের কর্মীরাও। কাঁথি তিন নম্বর ব্লকের বেতালিয়ার কাছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান । তাঁদের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠক থেকে ফেরার পথে কাঁথির মেচেদা বাইপাসে তৃণমূলের পতাকা ও মমতা ব্যানার্জির কাটাউট ছিঁড়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতা-কর্মীরা । অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার এবং উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এই অবরোধ করা হয় ।অন্যদিকে শুভেন্দু দল ছাড়ায় মেদিনীপুরে তৃণমূলের সংগঠনে যতটা ধ্বস নামার কথা ছিল বাস্তবে কিন্তু তা হয়নি। এমনকি যারা বিজেপিতে গিয়েছিলেন তাঁরাও মানে মানে করে ফিরে আসতে চাইছেন তৃণমূলে। এই অবস্থায় খাস অধিকারীদের গড় কাঁথিতে শুভেন্দুর অনুগামী ও বিজেপির কর্মীরা যা ভাবে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য যে মেদিনীপুরের ৩৫টি আসন বার করা তো দূরের কথা, কাঁথি মহকুমার মধ্যে থাকা বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেও কী আদৌ ফুটবে পদ্মফুল!