উত্তরপ্রদেশঃ হাথরাসে গণধর্ষণের পরে মৃত্যু হয়েছে এক দলিত তরুণীর। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতার পরিবার। কিন্তু তারমধ্যেই বয়ান বদলের জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার। জেলাশাসক তাঁদের সরাসরি হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার একটা ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। সেখানে সরাসরি হুমকি দিতে দেখা যাচ্ছে জেলাশাসককে। সম্প্রতি একটা ভিডিও প্রকাশ হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে। সেখানে দেখা যাচ্ছে হাথরাসের জেলাশাসক বলছেন, ‘আপনাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবেন না। এই সংবাদমাধ্যমের লোকেরা আজ আছে। কাল ওরা চলে যাবে। কিন্তু আমরা এখানেই থাকব। এটা আপনাদের উপর যে বয়ান বদল করবেন কি করবেন না। আমরাও বদলে যেতে পারি।‘ এই ঘটনার বিষয়ে নির্যাতিতার বৌদি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘ওরা আমাদের উপর চাপ দিচ্ছে। ওরা বলছে আমরা যদি বলি আমাদের মেয়ে করোনাভাইরাসে মারা গিয়েছে, তাহলে আমরা ক্ষতিপূরণ পাব। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বাবাকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।‘ তিনি আরও বলেন, ‘ওরা বলেছে এই ভিডিও গুলো দেখালেই মামলা বন্ধ হয়ে যাবে। ওরা মায়ের ভিডিও তুলে রেখেছে। সেই সময় মা নিজের মন থেকে কথা বলছিলেন। ওরা আমাদের এখানে থাকতে দেবে না। জেলাশাসক আমাদের সঙ্গে চালাকি করছেন। ওরা আমাদের উপর চাপ দিচ্ছে। ওরা আমাদের বয়ান বদলের জন্য চাপ দিচ্ছে।’ এরমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার প্রশান্ত কুমার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ফরেন্সিক রিপোর্টে নাকি কোথাও ময়নাতদন্তের প্রমাণ মেলেনি। বলা হয়েছে তরুণীর গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে গলায় আঘাতের জন্য মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির রিপোর্টে বলা হয়েছে কোথাও বীর্য পাওয়া যায়নি। এর থেকেই প্রমাণিত কিছু মানুষ ইচ্ছে করে এই ঘটনাকে উচ্চবর্ণ ও নিম্নবর্ণের রূপ দিতে চাইছে। এই ধরনের মানুষকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ অবশ্য যোগীরাজ্যের পুলিশের এই দাবির বিরুদ্ধে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নির্যাতিতার শরীর থেকে বেশ কিছুক্ষণ পরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাহলে সেখানে বীর্য না থাকারই কথা। কিন্তু তা ছাড়াও যে প্রমাণ মিলেছে তা থেকে ধর্ষণের ঘটনা স্পষ্ট। তাহলে কী ভাবে পুলিশ এই দাবি করছে, প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। এই ঘটনার পরে বিরোধিতা শুরু হয়েছে গোটা দেশে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী দল সবাই দোষীদের সাজার দাবি করেছে। এই ঘটনায় উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ। হাথরাস যাওয়ার পথে গ্রেফতার করা হয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও। তার মধ্যেই এই ভিডিও ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।