আগেই জল ছাড়া শুরু করেছিল ডিভিসির মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছিল আসানসোল ও ঝাড়খণ্ডের দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যদি না কমে, তাহলে এই জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ৷ সেই আশঙ্কা সত্যি করে মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসির মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার ৷ এই জল জমা হবে দুর্গাপুরে ৷ ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজে আরও চাপ সৃষ্টি হল ৷ ফলে নতুন করে জল ছাড়তে হবে দুর্গাপুর ব্যারেজকে ৷ পুজোর আগে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন পূর্ব বর্ধমান, হুগলি জেলার মানুষজন ৷ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ না কমলে আরও বেশি হারে জল ছাড়া হতে পারে ৷ দুর্গাপুর ব্যারেজে স্বভাবতই জল বাড়বে ৷ আর চাপ সৃষ্টি হলে সেখান থেকেও জল ছাড়া বাড়ানো হবে ৷ অর্থাৎ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ না কমলে দুর্গাপুজোর আগে বন্যার ভ্রূকুটি দেখা দিচ্ছে রাজ্যের নিচুস্তরের জেলাগুলিতে ৷ ডিভিসি সূত্রে খবর, বেলা 11টা নাগাদ মাইথন থেকে 1 লক্ষ 80 হাজার কিউসেক হারে এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে 70 হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে ৷ ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের নীচের এলাকাগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷ ডিভিসির ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে বন্যার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷ আড়াই লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে বলে ওয়েবসাইটে ডিভিসি নিজেই জানিয়েছে । আর এই জল ছাড়ার ফলে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে রাজ্যে ৷গত তিনদিন ধরে অবিরাম বর্ষণ চলছে ৷ এর ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্লাবনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । ডিভিসি জল ছাড়ার ফলে পূর্ব বর্ধমান এবং হুগলির নীচের স্তরের জায়গাগুলিতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল ৷ এবার মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল ৷ ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর 4টে 40 মিনিট থেকে ব্যাপক পরিমাণে জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি ৷ ঝাড়খণ্ডের দিকে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তেনুঘাট জলাধর থেকে জল ছাড়া হয়েছে ৷ এর জেরে পাঞ্চেত জলাধারের উপরে চাপ বেড়েছে ৷ ফলে পাঞ্চেত জলাধার থেকে ভোর থেকে 49 হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে ৷ অন্যদিকে মাইথন থেকে এই ক’দিনে কম জল ছাড়া হয়েছিল ৷ যেটুকু তাপবিদ্যুতের টারবাইন ঘোরানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল, সেটুকুই ছাড়া হচ্ছিল ৷ কিন্তু আসানসোলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এই মরশুমের সবচেয়ে বেশি জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ালো ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ৷ ডিভিসি সূত্রে খবর, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে প্রচুর পরিমাণে জল বেড়েছে এবং সেই জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ৷ ডিভিসি জানিয়েছে গত 24 ঘণ্টায় মাইথন জলাধারে 493.96 ফুট জলস্তর রয়েছে এবং পাঞ্চেতে 421.83 ফুট জলস্তর রয়েছে ৷ যদিও আশার আলো মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে সূর্য উঠেছে আসানসোলে ৷ তাই খানিকটা হলেও স্বস্তি মিলেছে ৷ যদিও ঝাড়খণ্ডের দিকে বেশি বৃষ্টিপাত হলে জল ছাড়া অব্যাহত থাকবে বলেই ডিভিসি সূত্রের খবর ৷