সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই এদেশে ছাড়পত্র পেতে চলেছে করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ওষুধ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকারের যৌথ উদ্যোগের ফসল এই টিকা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত কোভিডের অনান্য টিকার তুলনায় বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। কারন এই টিকা নিয়ে যেমন কোনও বিতর্ক দেখা দেয়নি, তেমনি এই টিকা অনান্য টিকার থেকে বেশি কার্যকর বলেই সকলে মনে করছেন। এমনকি এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুব কম বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই ‘কোভিশিল্ড’কে ছাড়পত্র দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আর তারপরেই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের কর্মী ও চিকিত্সকরাই পেতে চলেছেন এই রাজ্যের মধ্যে সর্বপ্রথম করোনার টিকা। ‘কোভিশিল্ড’ই দেওয়া হবে তাঁদের। দেশের মধ্যে টিকাকরণের প্রথম দফায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩০ কোটি নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এরমধ্যে যেমন দেশের স্বাস্থ্য কর্মী অর্থাত্ চিকিত্সক, নার্স স্বাস্থ্যকর্মী অর্থাত্ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা রয়েছেন, তেমনই পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিক থাকবেন। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশে প্রথম পর্যায়ের টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হবে। শেষ হবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে। আর এই রাজ্যে এই টিকাকরণের ক্ষেত্রে প্রথম সারিতেই রয়েছে রাজ্যের এসএসকেএম হাসপাতাল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে এসএসকেএম হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদেরই প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার কাজ চূড়ান্ত করতে ইতিমধ্যেই এসএসকেএম হাসপাতালে গঠিত হয়েছে চার সদস্যের বিশেষ কমিটি। আজই সেই কমিটির সদস্যরা আলোচনায় বসবেন। সেখানেই ঠিক হবে হাসপাতালের ১০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে সুষ্ঠুভাবে করোনা ভ্যাকসিন দিতে কোন পথে এগোনো হবে। ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে এরপরেই রয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এই বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য প্রথমেই রয়েছে এসএসকেএম। হাসপাতালের ছাত্র, শিক্ষক, নার্স, চিকিত্সক-সহ প্রায় ১০ হাজার কর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরপরেই রয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল এবং আরজিকর। আরজি কর হাসপাতালের সাড়ে তিন হাজারের বেশি স্বাস্থ্য ও অন্যান্য কর্মীদের করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নন-মেডিক্যাল ডেপুটি সুপার আখতার আলি নোডাল অফিসার হিসাবে দেখভাল করবেন।’ এদিকে ভ্যাকসিন নিয়ে চূড়ান্ত তত্পরতার মাঝেই কেন্দ্রীয় সংস্থা কোল ইন্ডিয়া এবং রুরাল ইলেকট্রিক করপোরেশন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে অন্তত ৭৩টি আইসলাইন রেফ্রিজারেটর দিয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণে এগুলি কাজে লাগবে। আবার কোল ইন্ডিয়া এককভাবে একটি রেফ্রিজারেটর ভ্যান দিচ্ছে।