কলকাতা

যোধপুর পার্কে টাকা চেয়ে জুলুমবাজি, ক্যাফের মালকিনকে প্রাণনাশের হুমকি, গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা সহ ৫

ফের মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। স্থানীয় একদল যুবক একটি ক্যাফের মালকিনের কাছে সনু নিগমের জলসা হবে বলে মোটা টাকা দাবি করে। ওই যুবকরা চেক কেটে প্রস্তুত রাখতে বলে চলে যায় গত শনিবার। বুধবার রাতে ওই যুবকরা চেক নিতে এসে হম্বিতম্বি করে বলে অভিযোগ। ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায় তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, করোনার কারণে ব্যবসার হাল খুব খারাপ। এত টাকা দেওয়া যাবে না। তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়। ওই পরিস্থিতির মধ্যেও স্বরলিপি গোটা ঘটনাটি ভিডিও তুলে রাখার চেষ্টা করেন।অভিযোগ, ওই যুবকরা তাঁর হাত মুচড়ে দিয়ে মোবাইল কেড়ে নেয়। অশ্লীল গালিগালাজও করা হয়। তিনি ১২ সেকেন্ডের মধ্যে কোনও মতে ভিডিওটি শেষ করেন। এই ভিডিওটির সত্যতা বঙ্গনিউজ ডিজিটাল যাচাই করেনি।তবে ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যে যুবক হুমকি দিচ্ছিলেন তিনি নিজেকে বিজয় দত্ত বলে পরিচয় দেন। বিজয় দত্তের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি।  বুধবার বেশি রাতে ওই ঘটনার পর স্বরলিপি এবং তাঁর এক বান্ধবী লেক থানায় অভিযোগ জানাতে যান। ফেরার পথে যাদবপুর থানার সামনে আবার তাঁদের গাড়ি ঘিরে ধরে ওই যুবকরা। তাঁরা থানায় ফোন করলে মিনিট ১৫ বাদে পুলিস আসে। পুলিসি নিরাপত্তায় দুজনে বাড়ি ফেরেন। ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, এলাকার জনা কয়েক তৃণমূল নেতা ক্যাফেতে এসে তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা চান। তিনি জানান, করোনা কালে ব্যবসার অবস্থা বিশেষ ভাল নয়, তাই চাঁদা দিতে পারবেন না। অভিযোগ একথা শোনার পর ওই নেতারা চাপ দিতে থাকেন। হুমকি দেওয়া হয়, বুধবারের মধ্যে যেন তাঁদের

দাবিমতো টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। চেকে সেই চাঁদা নিতে চান তৃণমূল নেতারা। নিজেদের ‘যোধপুর পার্ক উৎসবে’র উদ্যোক্তা বলে পরিচয় দেন বলে অভিযোগ স্বরলিপির।  বুধবার রাতের দিকে ক্যাফে বন্ধ করে স্বরলিপি ও তাঁর বন্ধুরা বাড়ি ফেরার সময় সেখানে যান সেই তৃণমূল নেতারা। দাবিমতো টাকা হাতে তুলে দিতে বলেন। স্বরলিপি জানান, তাঁর পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এরপরই তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন ওই নেতারা। প্রথমে অসম্মানজনক সম্বোধন করা হয়, এমনকী তাঁরা গাড়ি করে বেরতে চাইলে ওই নেতারা তাঁদের পিছু ধাওয়া করেন। শেষমেশ যাদবপুর থানার কাছে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। এরপর লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্বরলিপি। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ বিজয় দত্ত নামে তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করেন বলে অভিযোগ।  ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ”রাতের কলকাতায় কোনও দিন এমন ঘটনা দেখিনি। ওই নেতারা যেভাবে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, তাতে রীতিমতো ভয় পেয়েছিলাম। আমার ক্যাফের ম্যানেজারও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। আমি লোকাল কাউন্সিলরকে বলেছিলাম। তিনি কিছুই জানেন না বলে প্রথমে গুরুত্ব দেননি। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন। আমি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানাচ্ছি।” এই ঘটনায় তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ”যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের ডেকে পাঠানো হোক। যদি তাঁরা যোধপুর পার্ক উৎসবের উদ্যোক্তা হন, তাও খতিয়ে দেখা হোক। অন্যায় করলে নিরপেক্ষভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।”