ইডি অফিসার সেজে এক যুব তৃণমূল নেতাকে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। অনেক দিন ধরেই তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একটি হোটেল থেকে প্রতারককে গ্রেফতার করল মালদার ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। এই প্রতারণার পিছনে কোনও চক্রের হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতকে জেরা করে বাকিদের নাম জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ইডি অফিসার সেজে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করার অভিযোগ ওঠে চন্দন রায় নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকজনকে ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। তাঁর প্রতারণার ফাঁদে পড়েন শহরের এক যুব তৃণমূল নেতাও। তাঁর কাছ থেকেও দু’লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওই যুবক। তারপরে প্রতারিত হয়েছেন সেটা বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই নেতা। অভিযোগ পেয়ে চন্দনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। কয়েক মাস ধরে তল্লাশির পরে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি। এই ঘটনার সূত্রপাত গত বছর। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রাত ৮টা নাগাদ মোবাইলে একটি মেসেজ দেখে চমকে ওঠেন ইংরেজবাজার শহর যুব তৃণমূল সভাপতি শুভ্রদীপ দাস ওরফে বাপি। ইডি-র অ্যাসিস্টান্ট ব্যুরো চিফের পরিচয় দিয়ে রঞ্জন বোস নামের এক ব্যক্তি প্রথমে তাঁকে মেসেজ পাঠান ও তারপর ফোন করেন। শুভ্রদীপকে তলব করেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই তলবের পরে কলকাতায় ইডি-র সদর দফতরে গিয়ে হাজির হন শুভ্রদীপ। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন রঞ্জন বোস। শুভ্রদীপের অভিযোগ, একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারিতে তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন রঞ্জন বোস। প্রথমে তিনি টাকা না দিলেও দিনের পর দিন তাঁকে ভয় দেখানো হয়। তারপরে ভয় পেয়ে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই দু’লাখ টাকা ওই আধিকারিকের হাতে দেন তিনি। তারপরে আর ফোন বা মেসেজ আসেনি তাঁর কাছে। কিন্তু ছ’মাস পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাত্ রঞ্জনের ছবি দেখেন শুভ্রদীপ। যদিও নাম লেখা ছিল চন্দন রায়। তখনই সন্দেহ হয় শুভ্রদীপের। ইডি দফতরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন রঞ্জন বোস নামে কোনও আধিকারিকই নেই। তারপরেই তিনি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও খোঁজ খবর করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন চন্দন রায় দক্ষিণ দমদম এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী আশা দাস মালদার বাঙালটুলি লেনের বাসিন্দা। এরপরেই প্রতারণার অভিযোগ এনে যুব তৃণমূল নেতা পুলিশের দ্বারস্থ হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাতে থাকে ওই প্রতারক দম্পতি। শুভ্রদীপের অভিযোগের ভিত্তিতে জামিন অযোগ্য ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।